দেশের খবর: নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এক পুলিশ সদস্যকে ‘জানোয়ার’ বলেছিলেন ড. কামাল হোসেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) তার এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ করায় ড. কামাল হোসেন জোরে জোরে টেবিল চাপড়িয়েছেন। তারা বৈঠকে একরকম মাস্তানি করেছেন।
আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এইচ টি ইমাম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে দলের মিডিয়া উপকমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইসির সঙ্গে বৈঠক ছেড়ে উঠে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এইচ টি ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, আজকের (মঙ্গলবার) বৈঠক নিয়ে কিছু তথ্য পেয়েছি। আজ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের খুব শক্তিশালী দল একটি গিয়েছিল নির্বাচন কমিশনে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর থেকে শুরু করে মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান- সবাই ছিলেন বৈঠকে। ওই বৈঠক তারা বয়কট করেননি, এই তথ্যটাই দিতে চাই।
বৈঠকে কী হয়েছিল, সে বিষয়ে এইচ টি ইমাম বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ করতে করতে একপর্যায়ে ড. কামাল হোসেন ক্ষেপে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের কোনো এক উপপরিদর্শককে (এসআই) ‘জানোয়ার’ বলেছেন। সিইসি তাৎক্ষণিকভাবে তার এমন ভাষা ব্যবহারে প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, আপনি (ড. কামাল) এই শব্দ কেন এরকমভাবে ব্যবহার করলেন? এমন ভাষা আপনার মুখে শোভা পায় না।
আওয়ামী লীগ নেতা এইচ টি ইমামের ভাষ্য অনুযায়ী, ড. কামালকে সিইসি বলেন, এখানে যে একজন পুলিশ সদস্যকে জানোয়ার বললেন, এটি কি শোভনীয়? এটি কি আশা করা যায়?
এইচ টি ইমাম বলেন, এরপর যা ঘটেছে তা হলো- ড. কামাল হোসেন জোরে জোরে টেবিল চাপড়িয়েছেন। এর আগেও তো তিনি সাংবাদিকদের ‘খামোশ’ বলেছেন। তখন সিইসি ও অন্যান্যরা বলেন, আমরা অপমানিত বোধ করছি। আপনারা না থাকলেই ভালো।
কাজেই এই ইসির সঙ্গে বৈঠক জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বয়কট করেননি, বরং বৈঠকে তারা একরকম মাস্তানি করেছেন- এমনটিই জানান এইচ টি ইমাম।
সেনাবাহিনী নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেনের বক্তব্য বিষয়ে জানতে চাইলে এইচ টি ইমাম বলেন, সেনাবাহিনী বা সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে তাদের যে মনোভাব, সেটাও তো স্পষ্ট। ২০০১ সালে যেমন, তাদের হয়ে মানুষকে পেটালেই যেন সেনাবাহিনী খুব ভালো। আর সেনাবাহিনী যদি নিরপেক্ষ থাকে, তাহলে তারা খারাপ।
এর আগে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। তবে বৈঠক শেষ না করেই মাঝপথে বের হয়ে যান ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। পরে তারা সিইসি’র বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণের অভিযোগ আনেন।
ঐক্যফ্রন্ট নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানান, বৈঠকে নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ড. কামাল ও সিইসি’র মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই বৈঠক থেকে বের হয়ে আসেন সবাই।