দেশের খবর: সারাদেশে মোবাইল থ্রিজি ও ফোরজি ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত ১০টার পর দেশের সব মোবাইল ফোন অপারেটরকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) থেকে পাঠানো ওই পত্রে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মোবাইল ইন্টারনেটের থ্রিজি ও ফোরজি সেবা বন্ধ থাকবে।
তবে কতদিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকবে তা জানা যায়নি। থ্রিজি এবং ফোরজি ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হলেও ধীর গতির ইন্টারনেট টুজি সেবা এখনও চালু আছে।
এ বিষয়ে জানতে বিটিআরসি এবং মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এখনও স্বাভাবিক রয়েছে।
এ ব্যাপারে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক বলেন, আমরা ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা পাইনি।
ধীর গতির নেট ব্যবহার করতে চাইলে মোবাইল ফোনের সেটিং অপশনে গিয়ে (সেটিং>কানেকশন>মোবাইল নেটওয়ার্ক>২জি অনলি) টুজি করে দিলে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে।
প্রসঙ্গত, আসন্ন সংসদ নির্বাচনের ভোটের আগে ‘অপপ্রচার’ ঠেকাতে গত ১৩ ডিসেম্বর এক বৈঠকে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ইন্টারনেটের গতি কমানোর প্রস্তাবনা দেয় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।
ওই বৈঠকে সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত আইন-শৃঙ্খলাবিষয়ক সমন্বয়সভায় এই পরামর্শ দেয়া হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। এতে সব বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, সব রিটার্নিং অফিসার, জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি বলেন, নির্বাচনে মোবাইল ব্যাংকিং ও বিভিন্ন পরিবহনের মাধ্যমে টাকার লেনদেন হয়। এসব দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র দেওয়ার বিষয়ে নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দেন।
ঊর্ধ্বতন একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার ঠেকাতে তিনি নির্বাচনের সময় মোবাইল নেটওয়ার্ক ফোরজি থেকে নামিয়ে টুজি করা এবং ভোটকেন্দ্রে বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর সরাসরি সম্প্রচার নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাব দেন।
র্যাবের ডিজি বলেন, ২০১৪ সালের মতো কোনো ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। সাইবার ওয়ার্ল্ড উত্তপ্ত করে গুজব ছড়িয়ে যাতে নির্বাচনী পরিবেশ বানচাল করতে না পারে, সেদিকে তাঁরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন।
র্যাব বিটিআরসির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান। তিনিও ভোটের সময়ে তিন দিনের জন্য মোবাইল নেটওয়ার্ক ফোরজি থেকে নামিয়ে টুজিতে আনার প্রস্তাব করেন।
নির্বাচনে মোবাইল নেটওয়ার্ক ফোরজি থেকে টুজিতে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করেন আনসারের মহাপরিচালকও। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই মোবাইল ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধ রাখা হয়েছে।