দেশের খবর: বিএনপি নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের প্রার্থী করবে জানলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অংশ হতেন না বলে জানিয়েছেন এই জোটের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
রাজধানীর মতিঝিলে নিজের চেম্বারে বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে’র সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি একথা জানান। ওই আলাপচারিতার বিষয়বস্তু নিয়ে বৃহস্পতিবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে’র সঙ্গে আলাপকালে হতাশা প্রকাশ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি দুঃখের সঙ্গে বলছি, সাবেক জামায়াতের লোকজনকে প্রার্থী বানানো নির্বুদ্ধিতা। আমি লিখিত দিয়েছিলাম যে, জামায়াতের প্রতি কোনো ধরনের সমর্থন থাকবে না, ধর্ম, মৌলবাদ, চরমপন্থা আনা যাবে না।’
তিনি বলেন, যদি জানতাম (জামায়াত নেতাদের বিএনপির টিকিট দেওয়া হবে), আমি এর (ঐক্যফ্রন্টের) অংশ হতাম না। তবে ভবিষ্যতে সরকারে যদি এই লোকগুলোর (জামায়াত নেতা) কোনো ভূমিকা থাকে তবে আমি আর একদিনও থাকবো না।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব গ্রহণ প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি আইন পেশা নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। কয়েকমাস আগে বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন এবং আমাকে ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব দিতে বলেন। দেশজুড়ে কী ঘটছে সে বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম বিধায় আমি রাজি হই।’
তিনি নিজে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নন— একথা উল্লেখ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি ৮০ বছর বয়সী একজন মানুষ… আমি শুধুমাত্র দেশে আইনের শাসন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। আমি ভোটের দিনের জন্য অপেক্ষা করছি। ভোটের দিনটি হচ্ছে স্বাধীনতার দিন। যদি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে এটা হবে দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতা তখনই অর্থপূর্ণ যখন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়।’
গণফোরাম সভাপতি বলেন, ‘আমাদের জনগণকে তাদের দেশের মালিকানা পুনরুদ্ধার করতে হবে। তাই এই নির্বাচন হচ্ছে দখলদারদের হাত থেকে রাষ্ট্রকে পুনরুদ্ধার করার নির্বাচন।’
বিএনপির সঙ্গে জোট বাঁধা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন শক্তির মাঝে এই ধরনের ঐক্য আগেও হয়েছে। সঙ্গত কারণেই বাংলাদেশের জনগণ এ ধরনের ঐক্য চাইছিল। আর সেই কারণটি হচ্ছে— দেশ নির্দিষ্ট কোনো দল বা পরিবারের কাছে থাকুক, এটা তারা চায় না।’
বিরোধীপক্ষ ক্ষমতায় গেলে তিনি কি প্রধানমন্ত্রী হবেন কি-না জানতে চাইলে ড. কামাল বলেন, ‘আমি হ্যাঁ বা না বলতে চাই না… তবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এর জন্য কোনো পদ বা পারিশ্রমিকের প্রয়োজন নেই।’
আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি ভারতের প্রচ্ছন্ন সমর্থনের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের সত্যিকারের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক স্থাপন করা প্রয়োজন। নিজেদের স্বার্থের কথা ভাবার সময় ভারতের উচিত আমাদের স্বার্থের দিকটিও দেখা।’