বিনেদন ডেস্ক: চিত্রনায়িকা মাহির সঙ্গে শাওনের বিয়ে টিকেছিল মাত্র ‘মাসখানেক’। এরপরই চলচ্চিত্রে কাজ করা নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তখন তাঁরা ‘আলাদা বসবাস’ করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে শাওন-মাহি দুজন আলোচনার ও সমঝোতার মাধ্যমে ‘খোলা তালাক’ কার্যকর করেন। আজ বৃহস্পতিবার আদালতে দাখিল করা পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিয়ের মাত্র মাসখানেকের মধ্যে বাদী শারমিন আক্তার নিপা (মাহি) চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করলে বিবাদীর (শাওন) সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। ফলে তাঁরা আলাদাভাবে বসবাস শুরু করেন এবং খোলা তালাক (উভয় পক্ষের সম্মতিতে বিচ্ছেদ) কার্যকর হয় বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।’ কবে কোথায় তালাক কার্যকর হয়, সে ব্যাপারে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। এদিকে আজ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে এ মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে শাওনকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সোহরাব মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মাহির সঙ্গে শাওনের বিয়ে হয়েছিল এবং সেসব ডকুমেন্ট জব্দ করেছি এবং রেজিস্টারে কাজী সত্যায়িত করেছেন।’ আদালতের সহকারী সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) রাজু আহম্মেদ জানান, এখন মাহিকে এ মামলার হাজির হওয়ার জন্য ডাকা হবে। মাহি চাইলে মামলায় নারাজি দিতে পারেন। এ বিষয়ে মাহির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি। তাঁর ঘনিষ্ঠজনরাও প্রথমে ফোনে সাড়া দেননি। পরে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মামলার নথি থেকে জানা যায়, মাহির কথিত স্বামী শাওনকে গত বছরের ৫ জুন বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শামসুল আলম জামিন দেন। আদালতে দুজনের পক্ষ থেকে আপস মীমাংসার কথা বলা হলে আদালত জামিন দেন। গত বছরের ৫ জুন মাহির বাবা ও শাওনের বাবার মধ্যে একটি আপসনামা হয়। ওই দিন বেলা ৩টার দিকে মাহির উত্তরার বাসায় উভয় পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে ৩০০ টাকার দলিলে এই আপসনামা স্বাক্ষরিত হয়। আপসনামায় স্বাক্ষর করেন মাহির বাবা আবু বকর ও শাওনের বাবা নজরুল ইসলাম। সাক্ষী ছিলেন শাওনের বড় চাচা আবুল হাশেম ও ছোট চাচা মাহমুদুল হাসান। আপসনামাটি মো. ইকবাল হোসেনকে দিয়ে নোটারি পাবলিক করা হয়েছে। তাঁর চেম্বার দেখানো হয়েছে- হলরুম-১, সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশ। নোটারি সিরিয়াল-৩৩ এবং তারিখ ৫-৬-২০১৬। গত বছরের ২৮ মে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন নায়িকা মাহি। অভিযোগটি তিনি করেন কথিত স্বামী শাওনের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই শাওনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ শাওনের দক্ষিণ বাড্ডার বাসা থেকে কম্পিউটার জব্দ করে। নায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপুর বিয়ের পরের দিন থেকেই কয়েকটি গণমাধ্যমে মাহির ‘একাধিক বিয়ে-সংক্রান্ত’ কিছু ছবি প্রকাশ হতে থাকে। সেখানে ছবি প্রকাশের পাশাপাশি দাবি করা হয়, এর আগেও একাধিকবার মাহির বিয়ে হয়েছে। ছবি প্রকাশের পর থেকে আলোচনার ঝড় ওঠে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। বিষয়টি নজরে এলে নায়িকা মাহি জানান, তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার সংসার ভাঙার জন্য কেউ আমার পিছু লেগেছে।’ গ্রেপ্তার হওয়া শাওনের বাবা নজরুল ইসলাম গুলশানের একজন ব্যবসায়ী। শাওন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। শাওন দাবি করেন, নায়িকা মাহি তাঁর ভালো বন্ধু ছিলেন। ফেসবুকে মাহির সঙ্গে অনেক ছবিও পোস্ট করেন শাওন।