পলাশ দেবনাথ নুরনগর : আকাশে বিদ্যুৎ চমকানোসহ ঝড়ো হাওয়া না বইলেও, কালো মেঘের আনাগোনা দেখলে অথবা বৃষ্টি পড়তে শুরু করলে নুরনগরে শুরু হয় বিদ্যুৎ এর অনবরত লোডশেডিং। নুরনগরে বিদ্যুৎ-এর ঘনঘন লোডশেডিং বা দিনে রাতে বিদ্যুতের চমকিত আসা-যাওয়ার ফলে অসহনীয় হয়ে উঠেছে শ্যামনগর উপজেলার নুরনগর ইউনিয়নের মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপন। কোন কারন বা উপলক্ষ ছাড়াই প্রতিদিন গড়ে ২০/২৫ বার বিদ্যুৎ বিদ্যুতের সংযোগ প্রদান ও বিচ্ছিন্নতায় মনে হয় আলোকসজ্জার দায়িত্ব নিয়ে বিজলীবাতি পরিচালনা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। উল্লেখ্য যে, দিনের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকলেও মিটার ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নির্ধারিত মূল্যে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দিনের এক-তৃতীয়াংশ সময় বিদ্যুৎ ব্যবহার না করলেও প্রতিমাসেই অতিরিক্ত বিল দিতে হচ্ছে। বিশেষ করে, পড়াশুনা, গৃহস্থালী কাজ, ব্যবসা-বানিজ্যসহ সকল কাজকে অসম্ভব করে দিচ্ছে লোডশেডিং এর অন্ধকার। বিদ্যুৎ নির্ভর বাসস্থানগুলোর আলো-বাতাস-পানি বন্ধ থাকার মত অনাকাংখিত ঘটনায় অতিষ্ট হয়ে পড়ছেন বিদ্যুতের গ্রাহক ও ভুক্তভোগীরা। এদিকে ঘরেঘরে, সোলার সিষ্টেম, আইপিএস, জেনারেটর, চার্জার লাইট-ফ্যান, মোমবাতি, কেরোসিন নিয়ে প্রস্তুত থাকেন নুরনগর ইউনিয়নের সচ্ছ্ল পরিবারগুলো। অন্যদিকে অটো রাইস মিল, স-মিল, বরফ মিল সহ সকল বিদ্যুৎ-নির্ভর স্থাপনা ও ব্যক্তির জন্য লোডশেডিং কি প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তা বর্ননা করাও বাহুল্য। নিয়মিত দিনেরাতে সমানতালে লোডশেডিং এর কারনে শ্রেণিকক্ষে ও বাড়িতে সন্তানদের পড়াশুনার ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া নুরনগর ইউনিয়নের প্রধান আয়ের উৎস দেশের সাদা সোনা খ্যাত বাগদা চিংড়ী রপ্তানীতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। বরফ কল গুলোতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকার কারনে বরফ ডেলিভারী দিতে পারছেনা বরফ কল মালিকরা। এ কারনে নষ্ট হচ্ছে বাগদা চিংড়ী সহ রপ্তানী যোগ্য অন্যান্য সাদা মাছ। বিদ্যুতের অপেক্ষায়-তিক্ততায় অস্থির নুরনগর ইউনিয়নের মানুষ কি বিদ্যুৎ-এর অনবরত লোডশেডিং এর কবল থেকে রেহাই পাবেনা?