রাজনীতির খবর: পহেলা বৈশাখে বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীনকে (৫৫) কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ৫-৭ জনের একদল দুর্বৃত্ত জনবহুল উপশহর বাজার এলাকায় তাকে কুপিয়ে ফেলে যায়। পথচারীরা উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীন বগুড়া সদরের ধরমপুর এলাকার আনিসুর রহমান দুলা মিয়ার ছেলে। রাজনীতির পাশাপাশি আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।
রাত দেড়টায় এ খবর পাঠানো পর্যন্ত পুলিশ ও নিহতের পরিবার হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পাশের ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে ঘাতকদের সনাক্ত করার চেষ্টা করছিলেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীন প্রতি রাতে নিশিন্দারা উপ-শহর বাজারে নুনগোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলীমুদ্দিন ও কয়েকজনের সঙ্গে আড্ডা দিতেন। রোববার রাত ১০টার আগে তিনি তার প্রাইভেটকার নিয়ে উপ-শহর বাজারে আসেন। গোলাম মোস্তফা আবু তাহের নামে এক ব্যবসায়ীর বিসমিল্লাহ চাউল আড়ৎ থেকে চাল কেনেন।
চালগুলো প্রাইভেটকারে রেখে দোকানীকে তিনি জানান, তিনি মোবাইল ফোনে ফ্লাক্সিলোড দিবেন।
পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুর্বৃত্তরা তার উপর হামলা করে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত ও দায়ের কোপ দিয়ে পালিয়ে যায়। তিনি দৌঁড়ে কিছুদিন যাবার পর রাস্তার পাশে পড়ে যান। সব দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা চলে যান।
এ সময় ইব্রাহিম ও ডিউক নামে দুজন পথচারী রক্তাক্ত শাহীনকে উদ্ধার করে প্রথমে নামাজগড় এলাকায় স্বদেশ ক্লিনিকে নেন। সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে ফিরিয়ে দেন। এরপর মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা, পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী ও অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। সেখানে রাস্তার উপর কয়েক স্থানে রক্ত পড়েছিল। তারা পাশের ভবনের সিসি ফুটেজ নিয়ে ঘাতকদের সনাক্ত করার চেষ্টা করেন।
বগুড়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ সার্জিল আহমেদ টিপু জানান, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট শাহীন প্রায় প্রতি রাতে উপ-শহর বাজার এলাকায় নুনগোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলীমুদ্দিন ও অন্যদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে পারেননি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, রোববার রাত দেড়টা পর্যন্ত কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি। নিহত পরিবারের সদস্যরাও কোনো মন্তব্য করতে পারেননি।
এদিকে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীন হত্যার খবর পেয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন শজিমেক হাসপাতালে যান। তারা এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে ঘাতকদের চিহ্নিত এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। অন্যথায় তারা আন্দোলন গড়ে তুলবেন বলে জানিয়েছেন।