নিজস্ব প্রতিবেদক : সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে দোকান ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। লুটপাটে বাধা দেওয়ায় একই পরিবারের তিন নারীসহ সাতজন জখম হয়েছেন। এদের মধ্যে চারজনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে।
আটককৃতরা হলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার এগারানি গ্রামের দবিরউদ্দিন সরদারের ছেলে আলাউদ্দিন সরদার ও তার ছেলে ডালিম।
আখড়াখোলা গ্রামের সন্তোষ কুমার সাধুখাঁ জানান, এগারানি গ্রামের আলাউদ্দিন সরদার ১৯৮৪ সালে তার কাকা দুলাল চন্দ্র সাধুখাঁর কাছ থেকে ১০ শতক জমি কেনেন। বতর্মান মাপ জরিপে তাদের তিন শতকসহ নিজের ১০ শতক মোট ১৩ শতক রেকর্ড করে নেয়। গত বছরের নভেম্বর মাসে আলাউদ্দিন তাদের বসত ধরের টালির ফ্রেম কেটে বহুতল ভবন বানানোর চেষ্টা করে। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দিলে জমিস মাপ জরিপ করে উভয়পক্ষের সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সে অনুযায়ি জমি দখলে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে আলাউদ্দিন আবারো জমি জবর দখলের চেষ্টা করলে থানার গোলঘরে গত ১৯ ফেব্র“য়ারি এক শালিসি সভায় আপোষনামা করা হয়। আপোষনামা অনুযায়ি আলাউদ্দিন (সন্তোষ) তাদের জবরদখলীয় জমিতে ছাদ ঢালাই করলেও তাদের দোকান ঘর ছেড়ে দেয়নি। পরে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে তাদের দোকারঘর বুঝিয়ে দেয় আলাউদ্দিন। এর আগে আলাউদ্দিন তাদের পরিবারসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে দু’টি।
সন্তোষ সাধুর অভিযোগ, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে আলাউদ্দিন, তার ছেলে ডালিম, সেলিম, জামাতা লিটন, পুত্রবধু রুবিসহ ১৫/২০জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী তাদের দোকানঘরের তালা ভেঙে ভিতরে থাকা মালামাল লুট করে। দেয়ালে থাকা মাকালি ও দুর্গার মুর্তির ছবি মেঝেতে ফেলে পদদলিত করে। লুট করা হয় নগদ টাকা। লুটপাট ও ভাঙচুরে বাধা দেওয়ায় তাকেসহ চায়না সাধু, স্বপ্না সাধু, রুমা সাধু, তুলসী, নিমাই ও দেবব্রত সাধুকে পিটিয়ে জখম করা হয়। এ সময় হামলাকারিরা ইট ও বালি দিয়ে দোকান ঘরের বাইরে প্রাচীর দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। আহতদের মধ্যে তাকেসহ চায়না, স্বপ্না, সন্তোষ ও নিমাইকে উদ্ধার করে পুলিশ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় পুলিশ আলাউদ্দিন ও তার ছেলে ডালিমকে আটক করতে সক্ষম হলেও অন্যরা পালিয়ে যায়।
সরেজমিনে শুক্রবার বিকেল তিনটায় আখড়াখোলা বাজারে গেলে গ্রাম পুলিশ সুকুমার সরকার, রজব আলী, মোকছেদ আলীসহ কয়েকজন বলেন, আলাউদ্দিন একজন কুখ্যাত চোরাকারবারি ও ইউপি চেয়ারম্যান হত্যা মামলার আসামী । তিনি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করে একের পর এক সাধু পরিবারগুলোর উপর হামলা চালিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে উচ্ছেদের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
আটককৃত আলাউদ্দিন জানান, ওই দোকান তার নিজের। সন্তোষরা জোর করে দখলে রেখেছে।
সাতক্ষীরা সদর থানসার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার বিকেল ৬টা পর্যন্ত এ নিয়ে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে হামলার সময় আলাউদ্দিন ও তার ছেলে ডালিমকে আটক করা হয়েছে।
১৪.০৬.১৯