বিদেশের খবর: ভারতের ঝাড়খন্ড প্রদেশে এক মুসলিম যুবককে অসংখ্য মানুষের সামনে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মারধরের সময় তাকে ‘জয় শ্রী রাম’ ও ‘জয় হনুমান’ বলতে বলা হলে তা বলেও নিজের জীবন বাঁচাতে পারেনি ওই যুবক। মারধরের পর তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। সেখানে চার দিন থাকার পর ভীষণ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয় তার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া ট্যুডের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নির্মমভাবে পিটুনি খেয়ে হত্যার শিকার ২৪ বছর বয়সী তাবরিজ আনসারীকে চোর বলে অভিহত করে টানা আঠারো ঘণ্টা মারধরের পর পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।
খারশাওয়ান জেলায় গত ১৮ জুন ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। নিহত যুবক প্রদেশের খারশাওয়ান জেলার বাসিন্দা। নির্মম নির্যাতনের শিকার ওই যুবককে আহত অবস্থায় টানা চারদিন জেল হাজতে রাখা হয়। হাজতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে গত ২২ জুন স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।নির্মম ওই ঘটনা এবং মারধরের বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি করছেন। বিশেষ করে ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন।একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি কাঠের লাঠি দিয়ে তাবরিজ আনসারী নামের ওই যুবকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন। যুবকটি ওই ব্যক্তির কাছে আকুতি করছেন তাকে ছেড়ে দেয়ার। কিন্তু ছেড়ে না দিয়ে যুবককে ‘জয় শ্রী রাম’ আর ‘জয় হনুমান’ বলতে বাধ্য করেন ওই ব্যক্তি। তবে এসব বলেও পিটুনির হাত থেকে নিস্তার পাননি ওই যুবক। ওই সময় পাশে দাঁড়িয়ে অসংখ্য ব্যক্তি সেই ঘটনা দেখলেও কেউ কিছু বলেননি।
ইন্ডিয়া ট্যুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গণপিটুনির পর ওই যুবককে গত ১৮ জুন পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। সেদিন থেকে তিনি জেল হাজতে ছিলেন। পরে গত ২২ জুন হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম পাপ্পু মন্ডল। তাবরিজের মৃত্যুর জন্য দায়ী হিসেবে চিহ্নিত করে তাকে আটক করেছে পুলিশ।তাবরিজ আনসারী পুনেতে শ্রমিকের কাজ করেন। পারিবারের সঙ্গে ঈদ পালনের জন্য গত রমজানে তিনি বাড়ি আসেন। ঈদ শেষ হলেও তিনি পুনেতে তার কর্মস্থলে ফিরে যাননি কারণ বাড়িতে তার বিয়ের আয়োজন চলছিল। ঘটনার দিন রাতে আরও দুজন তার সঙ্গে ছিল।