সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টটা শততম বলেই স্মরণীয় করে রাখতে সবকিছু করছে বাংলাদেশ। যার প্রমাণ পাওয়া গেছে প্রথম সেশনেই। এই সেশনে সফল বাংলাদেশ ৪ উইকেট তুলে নিয়ে চাপে ফেলে দিয়েছে স্বাগতিকদের। যদিও দ্বিতীয় সেশনে ফিরে প্রতিরোধ দিচ্ছিলেন দিনেশ চান্দিমাল ও ধনঞ্জয়। দুই জনের জুটিতেই সংগ্রহ ১০০ ছাড়ায় স্বাগতিকরা। কিন্তু দলীয় ১৩৬ রানে ধনঞ্জয়কে বোল্ড করে ৬৬ রানের এই জুটি ভেঙে ফের চাপ সৃষ্টি করেছেন তাইজুল। স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৩৬ রান।
এর আগে শততম টেস্টে অন্যরকম কীর্তিই গড়ে বাংলাদেশ। টস হেরে বোলিং শুরু করে টানা তিন মেডেন দেয় সফরকারীরা। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এমন শুরু এর আগে কখনই করেনি বাংলাদেশ দল। সেই ধারাতেই শ্রীলঙ্কাকে শুরুতে আটকে রেখে দিমুথ করুনারত্নেকে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৭ রানে করুনারত্নে বাইরের বল খেলতে গিয়ে জমা পড়েন মেহেদির হাতে। ধুঁকতে থাকা এখানেই শুরু। ১২তম ওভারে মিরাজের বলে বেড়িয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন কুশল মেন্ডিস। তাতেই স্টাম্পড করে দেন উইকেটরক্ষক মুশফিক। মেন্ডিস বিদায় নেন ৫ রানে। এরপর টিকতে পারেননি ওপেনার থারাঙ্গাও (১১)। সেই মিরাজের আঘাতেই স্লিপে সৌম্য সরকারকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন লঙ্কান এই ওপেনার।
এরপর চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন গুনারত্নে ও চান্দিমাল। এই জুটিতে ভর করেই ৭০ রানের কোটা পেরোয় স্বাগতিকরা। ধীরে ধীরে এই জুটি প্রতিরোধ দেওয়ার চেষ্টা করলে ২৭.৪ ওভারে শুভাশীষের বলে ভাঙে গুরুত্বপূর্ণ এই জুটি। লেগবিফোর হয়ে বিদায় নেন গুনারত্নে (১৩)। এই উইকেটের পরেই মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যায় দুই দল। গুনারত্নে বিদায় নেওয়ার আগে এই জুটিতে আসে ৩৫ রান। তবে বিরতির পর ফিরেই ৫ম উইকেটে জুটি গড়েন চান্দিমাল ও ধনঞ্জয়। এই জুটিতেই ১২তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন চান্দিমাল।
ধীরে ধীরে থিতু হতে থাকে এই জুটি। কিন্তু ৪৭.২ ওভারে এই জুটি ভেঙে দেন স্পিনার তাইজুল। ৩৪ রানে ব্যাট করতে থাকা ধনঞ্জয়কে বোল্ড করেন। চান্দিমাল ক্রিজে আছেন ৫২ রানে। তার সঙ্গে ব্যাট করছেন নিরোশান ডিকবিলা(০)।
অবশ্য এর আগে ৪৫.৩ ওভারে তাইজুলের বলে ক্যাচ উঠিয়েছিলেন চান্দিমাল। দুর্দান্তভাবে সেটি লুফে নিলেও ক্যাচটি মাটিতে স্পর্শ করায় নাকচ হয়ে যায় আবেদন।
খেলার ধারাতেই ১০.৫ ওভারে এলবিডব্লুর আবেদন করেছিলেন মুস্তাফিজ। অনফিল্ড আম্পায়ার আউট দিলেও থারাঙ্গা রিভিউ নিলে বেঁচে যান। কলম্বোর পি সারা ওভালে টস জিতে শুরুতেই ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। প্রথম কয়েক দিন ব্যাটিং বান্ধব পিচ থাকবে বলেই এমন সিদ্ধান্ত নেন রঙ্গনা হেরাথ। আর শুরু খেলতে নেমেই বাংলাদেশের দুই পেসার মুস্তাফিজুর ও শুভাশীষের বোলিংয়ে ধুঁকেছে লঙ্কান দুই ওপেনার। তাই প্রথম তিন ওভারে রান নেওয়ার ক্ষেত্রে সেভাবে কোনও ঝুঁকি নেয়নি স্বাগতিকরা। তবে নবম ওভারে মুস্তাফিজের বলে টিকতে পারেননি ওপেনার করুনারত্নে।
এবার গলের প্রথম টেস্টের মতো দ্বিতীয় টেস্টেও টস ভাগ্য হাসেনি বাংলাদেশের। কলম্বোতে এই টেস্টেও টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। লঙ্কান দলে রয়েছে একটি পরিবর্তন। বাদ পড়েছেন লাহিরু কুমারা। তার জায়গায় রয়েছেন ধনঞ্জয় ডি সিলভা। বাংলাদেশ দলে রয়েছে চারটি পরিবর্তন। ফিরেছেন ইমরুল, সাব্বির ও কামরুল। আর টেস্ট অভিষেক হচ্ছে মোসাদ্দেক হোসেনের।
আগের টেস্ট থেকে বাদ পড়েছেন তাসকিন ও মুমিনুল। লিটন কুমার দাস চোট নিয়ে আগেই ছিটকে গেছেন আর মাহমুদউল্লাহ যে থাকছেন না তা আগেই নিশ্চিত ছিল।