দেশের খবর: মাগুরার শ্রীপুরে পুলিশের ধাওয়ায় নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ার পর আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করেছে ডুবুরিরা।
বুধবার সকালে নদীতে তার লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত মাগুরা ডিবির এসআই ওলিয়ার রহমান এবং কনস্টেবল বুলবুলকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। এছাড়া এ বিষয়ে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মাগুরা ডিবি পুলিশের একটি শ্রীপুর উপজেলার হাট শ্রীকোল বাজারে যায়। এ সময় শ্রীকোল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম ওই বাজারের মদনের চায়ের দোকানে বসেছিল।
কিন্তু বাজারে হঠাৎ পুলিশের উপস্থিতি দেখে সে দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ডিবি পুলিশের এসআই ওলিয়ার রহমান এবং কনস্টেবল বুলবুল তাকে ধাওয়া করলে আমিরুল কুমার নদীতে নেমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আমিরুল নদী সাঁতরে কিছুদূর যাওয়ার পর তাকে উদ্ধারের জন্যে সাহায্য চায়। কিন্তু এসআই ওলিয়ার তাকে উদ্ধার না করে নদীরঘাট থেকে প্রদীপ মাঝির নৌকা নিয়ে লাঠি দিয়ে তাকে আঘাত করে। এ ঘটনার পর থেকেই আমিরুল নিখোঁজ ছিল।
পরে খুলনায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে খবর দেয়া হলে বুধবার সকাল ৯টার দিকে তারা কুমার নদীতে তল্লাশি শুরু করে। প্রায় আধাঘণ্টা তল্লাশি চালানোর পর তারা নদীর তলদেশ থেকে আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুলের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহতের ভাই কামরুল ইসলাম আমিরুলের মৃত্যুর ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, ১০ জুন শ্রীকোল গ্রামে আধিপত্য বিস্তারের ঘটনা নিয়ে বাহারুল মেম্বরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে শ্রীপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান আমিরুলসহ ২১৮ জনের নামে মামলা দায়ের করে। আমার ভাই রবিউল ওই ঘটনায় জড়িত না থাকলেও তার নামে মামলা দেয়ার পর শেষ পর্যন্ত পানিতে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।
মাগুরা পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান বলেন, প্রাথমিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত এসআই ওলিয়ার এবং কনস্টেবল বুলবুলকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। এছাড়া লাশ উদ্ধারের পর মর্গে পাঠানো হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার পরই তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলামকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান।