এক দিন আগেই জন্মদিনের বিশেষ উপহার পেয়ে গেলেন, কী বলেন? তামিম ইকবাল হাসেন। অনাবিল হাসি, ‘তা বলতে পারেন!’ না, জন্মদিনটা তাজ সমুদ্র হোটেলে কাটবে অনাড়ম্বর। দলের পক্ষ থেকে একটা কেক এনে হয়তো কাটা হবে। আসল জন্মদিনতো পালিত হবে চট্টগ্রামে। আজ দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালের ২৮তম জন্মদিন। আর জন্মদিনের আগের দিনটিতে বাংলাদেশ জিতে গেল শততম টেস্টে। যে জয়ে তার বড়সড় অবদান আছে বলেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ।
টেস্টে শ্রীলঙ্কা নামের জুজুর একটা হিল্লে করতে পেরেছেন কাল। এই দলটির বিপক্ষে কখনো সেভাবে কথা বলত না তার ব্যাট। তাদের বিপক্ষে অবশেষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি খেললেন, সেটিও শ্রীলঙ্কাতেই। এরপর তো বাংলাদেশ ফিরছে তার প্রিয় সংস্করণ ওয়ানডেতে। তামিমের ব্যাট নিশ্চয়ই সরব হবে নির্ভাবনায়।
জন্মদিন নিয়ে বললেন, এখানে ঘটা করে জন্মদিন পালনের সুযোগ কোথায়? সেই তো মাথায় থাকে খেলা আর অনুশীলন। সবে টেস্ট সিরিজটা শেষ করা গেল। এরপর তিন ম্যাচের ওয়ানডে আর দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তিন সংস্করণেই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের মালিক, তাকে যে সব সময় মনঃসংযোগ ধরে রাখার সাধনা করতে হয়।
কিন্তু কাল লাঞ্চের পর দলের বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে কী করে ওরকম সপ্রতিভ হলো তার ব্যাট? যে ব্যাখ্যা পাওয়া গেল সে অতি সাধারণ, ‘লাঞ্চের সময় সাব্বিরের সঙ্গে আলোচনা করছিলাম, উইকেট দেওয়া যাবে না, আর স্বাভাবিক খেলাটা খেলব।’ বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের স্বাভাবিক খেলাটা অবশ্য অনেক সময় অতি আক্রমণাত্মক। এই আক্রমণাত্মক হয়েই তো ৮২ রানে ফিরলেন ক্যাচ দিয়ে।
বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমের পাশে বসে মাশরাফি বিন মুর্তজা লাঞ্চের পর থেকে খেলা দেখছিলেন মাহমুদউল্লাহ, নুরুল হাসান, শুভাগত হোম ও সানজামুল ইসলামকে নিয়ে। মাশরাফি তার মতো করেই তামিমের সমালোচনায় মুখর, ‘ও তো ওর বাঁধা সেঞ্চুরিটা ফেলে এসেছে।’
নিজের অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরিটি এল না বলে মনে হয় না তামিমের কোনো দুঃখ আছে। তার কণ্ঠে বরং যা করতে চেয়েছিলেন, সেটি করতে পারার তৃপ্তি, ‘আমি আসলে রক্ষণাত্মক থাকতে চাইনি। শেষ দিনের উইকেট, কখন কী হয় বলা তো যায় না। তা ছাড়া শ্রীলঙ্কান স্পিনাররাও অনেক ভালো।’
মানসিকতা বদলে নিজের এমন ব্যাটিংয়ের রহস্য না হয় বোঝা গেল। গল টেস্টে অমন হারের বোঝা পিঠে নিয়ে এখানে ঘুরে দাঁড়ানোর রহস্য কী?
তামিমের কথায় চমকে উঠতে হয়, এই তো সংঘবদ্ধ একটা দল হয়ে ওঠার মূলমন্ত্র, ‘প্রতিটি ম্যাচের আগে এখন আমরা খেলোয়াড়েরা আলাদা করে বসি। ম্যাচটি কীভাবে নতুন করে, নতুন পরিকল্পনায় খেলব সেটি নিয়ে আলোচনা করি। গলে হারের পরও আমরা আলাদাভাবে বসেছি, আলোচনা করেছি, শততম টেস্টে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। যার যার জায়গা থেকে অবদান রাখতে হবে। তাতেই মনে হয় কাজ হয়েছে।’