দেশের খবর: একাত্তরে খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন ও লুণ্ঠনে যেসব বাঙালি বেতন নিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করেছিল, তাদের তালিকা সংগ্রহ করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এ কাজ শুরু করেছে তারা।
রোববার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মইনউদ্দীন খান বাদল, রাজিউদ্দিন আহমেদ, রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম, এ বি তাজুল ইসলাম এবং কাজী ফিরোজ রশীদ অংশ নেন।
এর আগে গত ২৬ মে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যদের তালিকা সংগ্রহ করে তা রক্ষণাবেক্ষণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আধা সরকারি (ডিও) চিঠি পাঠানো হচ্ছে।
রোববার বৈঠকের পর শাজাহান খান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেতনভোগী রাজাকারদের তালিকা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। জেলা পর্যায়ে রাজাকারদের তালিকা সংগ্রহের জন্য জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, জেলায় জেলায় সরকারের রেকর্ড রুমে রাজাকারদের তালিকা রয়েছে। সেখান থেকে তালিকা সংগ্রহ করে গেজেট আকারে প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসকরা যত দ্রুত কাজ শেষ করতে পারবে তত দ্রুতই তালিকা গেজেটে প্রকাশ করা যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৈঠকের কার্যপত্রে দেখা যায়, কমিটির আগের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অনুবিভাগে সংরক্ষিত রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা ও মুক্তিযুদ্ধের সময় জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলনকারী রাজাকারদের তালিকা সংরক্ষণের সুপারিশ করা হয়।
রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তি ও সংগঠন এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ ও পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সদস্যদের দেশদ্রোহী আখ্যায়িত করা হয়েছিল। এমনকি তাদের আসনগুলো শূন্য ঘোষণা করে তাদের স্থলে পছন্দের ব্যক্তিকে সদস্য করা হয়েছিল। এসব ব্যক্তির নাম স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রস্তুত ও সংরক্ষণে আইন সংশোধনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে ওই কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি নিদর্শন ও বধ্যভূমি সঠিকভাবে সংরক্ষণের লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়। এ সময় প্রতিটি উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধ কমপ্লেপ শহর থেকে বিচ্ছিন্ন স্থানে নির্মাণ না করে যথোপযুক্ত স্থানে নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা হয়।