ভিন্ন স্বাদের খবর: নারায়ণগঞ্জে একটি বেসরকারি হাসপাতালে এক প্রসূতি মা এক সঙ্গে তিনটি সন্তান প্রসব করেছেন। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে শহরের ডনচেম্বার এলাকায় মেডিস্টার জেনারেল হাসপাতালে সিজার অপারেশনের পর তিন সন্তান প্রসব করেন নাসরিন আক্তার নামে এই প্রসূতি। এক সঙ্গে তিনি একটি ছেলে ও দুইটি মেয়ে শিশু প্রসব করেছেন।
তিনটি শিশুর অবস্থাই স্বাভাবিক ও ভালো বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসক। এদিকে একসঙ্গে তিন সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরে ব্যাপক আলোচনায় এসেছে।
প্রসূতি নাসরিন আক্তার পাবনা জেলার শোভানগর উপজেলার তারাবাড়িয়া গ্রামের আব্দসু সামাদের স্ত্রী। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সৈয়দপুর ফকিরবাড়ি এলাকায় স্বামীর সাথে তিনি বসবাস করেন। তার স্বামী আব্দুস সামাদ মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুরের প্রিমিয়ার সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে কর্মরত আছেন।
আব্দুস সামাদ জানান, দীর্ঘ সাত বছরের দাম্পত্য জীবনে তাদের এর আগে কোনো সন্তান ছিলো না। দীর্ঘ সময় প্রতীক্ষার পর তার স্ত্রী একসঙ্গে তিনটি সন্তান প্রসব করায় তিনি অত্যন্ত আনন্দিত। তিনি সন্তানকেই তিনি সমান আদর, স্নেহ ও ভালোবাসা দিয়ে মানুষের মতো মানুষ করে তুলতে চান।
তিনি জানান, এদিন সকাল আটটার দিকে তার স্ত্রীর প্রসব ব্যথা উঠলে শহরের ডনচেম্বার এলাকায় মেডিস্টার ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। এখানে আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের গাইনী ও অবস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক, প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শারমিন সিদ্দিকা রুমকির তত্ত্বাবধানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তিনটি সন্তানের জন্ম দেন তার স্ত্রী নাসরিন। তিন সন্তান ও স্ত্রীর জন্য আবদুস সামাদ সবার কাছে দোয়া কামনা করছেন।
সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া তিন সন্তান ও তাদের মা নাসরিন সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ডা. শারমিন সিদ্দিকা।
তিনি জানান, সন্তান তিনটির মধ্যে দুইটি মেয়ে ও একটি ছেলে। তাদের ওজন যথাক্রমে প্রথম মেয়ে ২.৭ কেজি, দ্বিতীয় ছেলে ২.৬ কেজি এবং তৃতীয় মেয়ে ২.৫ কেজি। বর্তমানে মা নাসরিনসহ তিনটি সন্তানই সুস্থ রয়েছেন বলে জানান ডা. শারমিন সিদ্দিকা।
ডা. শারমিন সিদ্দিকা বলেন, যমজ সন্তান প্রসবের বিষয়টি খুব সাধারণ। তবে একসাথে তিন সন্তান প্রসবের বিষয়টি সাধারণত হয় না। তবে এতে ঝুঁকি থাকলেও এই প্রসূতির ক্ষেত্রে তা হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই প্রসব সম্পন্ন হয়েছে। ৩৭ সপ্তাহ পার করার পর এই প্রসূতি সন্তান তিনটি প্রসব করেন। তিনি বলেন, গর্ভকালীন অবস্থায় একটি শিশু উল্টে ছিল, নরমাল ডেলিভারি করতে গেলে বাচ্চাটির জীবিত ভূমিষ্ট হওয়ার ঝুঁকি ছিল। এ কারণে সিজার করতে বাধ্য হয়েছি। সিজারে খুব সুস্থ অবস্থায় তিনটি বাচ্চার প্রসব করানো হয়েছে।
দাম্পত্য জীবনের সাত বছরের মাথায় সন্তানের মুখ দেখলেন আব্দুস সামাদ। তাও আবার একসাথে তিন সন্তান। আনন্দ আর অনুভূতি প্রকাশ করার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে তিনি।
আবদুস সামাদ বলেন, বিয়ের সাত বছর পর আমার ঘরে তিনটি সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ায় আমি ভীষণ খুশি হয়েছি। এ আনন্দ বলে বোঝানো সম্ভব নয়। এখনও বাচ্চাদের নাম রাখা হয়নি। তাদের মা এখন হাসপাতালে অবজারভেশনে আছেন। ডাক্তার রিলিজ দিয়ে দিলে মা ও বাচ্চাদের বাড়িতে নিয়ে তারপর সব আনুষ্ঠানিকতা হবে। সন্তানদের মুখে মধুর কাঙ্খিত “বাবা” ডাক শোনার অপেক্ষায় আছেন তিনি।