আসাদুজ্জামান : সাতক্ষীরার তালার ইউএনওর নির্দেশে ভাংচুর করা হয়েছে কৃষক আমিনুর পরিবারের বাড়ি ঘর। শুধু ভাংচুর করে ক্ষ্যান্ত হননি, হামলাকারীদের হাতে মার খেলেন বাড়ির নারী পুরুষ সবাই। সাথে সাথে তাদের পৈত্রিক মামলাধীন জমিতে তৈরি হলো মাটির রাস্তা। আর নির্বাহী অফিসারের এই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে বাহবা আদায় করলেন তালার ধান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আরিফুল আমিন মিলন।
শুক্রবার দুপুরে তালার কাটাখালি গ্রামের কৃষক আমিনুর রহমানসহ তার শরীক পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সাতক্ষীরায় এক সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাদের কোন কথা শুনতেই চাননি। উল্টো বলেছেনÑ “আমি কোর্টফোর্ট মানি না”। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য আরিফুল আমিন মিলনকে তার মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
তবে ইউএনও ফরিদ হোসেন বলেন, আইনের উর্ধে কেউ নন। আমি কোর্ট না মানার কোনো কথা বলিনি। তারা আদালতের মামলার কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষক আমিনুর রহমান বলেন, তালার ধান্দিয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর মৌজার এসএ ৬৬৬ খতিয়ানে ৩৫৪ দাগে ৮৪ শতাংশ জমির মধ্যে ৫ শতক পৈত্রিক রেকর্ডীয় জমিতে তার ঘরবাড়ি ও গাছগাছালি রয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এই জমিতে নিজের স্বার্থে রাস্তা তৈরির জন্য প্রতিবেশী রাজ্জাক মল্লিক চেষ্টা করে আসছিলো। আমিনুর রহমান বলেন, এই বিষয়ে তিনি সাতক্ষীরা সহকারী জজ আদালতে এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুটি মামলা দাখিল করেছেন। তা এখন বিচারাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে রাজ্জাক মল্লিক তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদ হোসেনকে ম্যানেজ করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিয়ে আসেন। গত ২১ মার্চ দুপুর ১২টায় তার পুকুরপাড়ে এসে নির্বাহী অফিসার ইউপি সদস্য আরিফুল আমিন মিলনকে তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে রাস্তা নির্মানের হুকুম দেন।
সংবাদ সম্মেলনে আমিনুর বলেন, তাদের কোন কথাই নির্বাহী অফিসার ফরিদ হোসেন শুনতে রাজি হননি। এমনকি জমির কাগজপত্র দেখার চেষ্টাও করেননি। পরদিন সকালে ইউপি সদস্য আরিফুল আমিন মিলনের নেতৃত্বে মান্নান মল্লিক, মিঠু মল্লিক, রফিকুল মল্লিক, মোজাফফর মল্লিক, সাত্তার মল্লিক, সবুর মল্লিক ও বজলু বিশ্বাস সহ চৌকিদার রাজ্জাক ও চৌকিদার সুনীল তাদের বাড়িঘর ভাংচুর করে দেয়। এসময় গাছপালা কেটে সাবাড় করে জোর করে রাস্তা নির্মাণ করতে থাকে। বাধা দেওয়ায় তারা আব্দুর রহিমকে বেদমভাবে মারপিট করে। তাকে রক্ষা করতে যেয়ে তার মা জোসনা বেগম ও প্রতিবেশি মঞ্জিলা বেগমও হামলাকারীদের হাতে আহত হন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা এ ঘটনার প্রতিকার দাবি করেন এবং তালার ইউএনও ফরিদ হোসেন, ইউপি সদস্য আরিফুল আমিন মিলন এবং রাজ্জাক মল্লিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আমিনুর রহমান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ হোসেন, বিউটি খাতুন, আব্দুর রহিম, মঞ্জিলা বেগম ও জোসনা বেগম।
পূর্ববর্তী পোস্ট