মোঃ রাসেল ইসলাম,বেনাপোল(যশোর)প্রতিনিধি: দূর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক ডিডি আহসান আলীর বিরুদ্ধে বুধবার সকালে বেনাপোল পোর্ট থানার মামলা মামলা করেছে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। বেনাপোল কাস্টম হাউসের পক্ষে মামলাটি করেন কাস্টমস হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জিএম আশরাফুল ইসলাম। যার মামলা নং-৩৮ তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯।
বেনাপোল কাস্টমস অফিসার্স ক্লাবের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে দুদকের ভূয়া ডিডি পরিচয়দাতা আহসান আলীকে গ্রেফতারের দাবী করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জিএম আশরাফুল ইসলাম এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, আহসান আলীর অর্থ বিনিয়োগে রিতু ইন্টারন্যাশনাল ও জেড এইচ কর্পোরেশন এর নামে আমদানি করা ৩১টি পণ্যচালানের বিপরীতে ২ কোটি ২ লাখ ৭০৮ টাকার রাজস্ব ফাকির তদবিরে ব্যর্থ হয়ে বেনামে দুদুক , রাজস্ব বোর্ড সহ বিভিন্ন দফতরে কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন এবং তা বিভিন্ন্ পত্র পত্রিকায় সরবরাহ করেন। ফলে কাস্টমস হাউসের কমিশনার শুল্কায়ন কাজে মনোনিবেশ করতে ব্যর্থ হওয়ায় চলতি অর্থ বছরে আগস্ট মাস পর্যন্ত ৮০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়। এর আগে তিনি মোবাইল নং- ০১৭৭০০২৯৪১০১ থেকে কল করে কমিশনার মহোদয়সহ এ দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি,এসএমএস এবং ১৯/১১/২০১৮ তারিখে সশরীরে এসে কমিশনার মহোদয়কে চাপ সৃষ্টি করেন। নিরপাত্তাজনিত কারণে কমিশনার মহোদয়ের কক্ষে তাঁর উপস্থিতিকাল মোবাইলে ভিডিও করে রাখা হয়। ভিডিও ক্লিপ, অডিও ক্লিপ ও হুমকির এসএমএস মামলার সাথে প্রমাণ হিসেবে দাখিল করা হয়।
সম্প্রতি বেনাপোল কাস্টমস হাউস কর্তৃক আটককৃত ২ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ৬৭ মণ (২.৫ মে. টন) ভায়াগ্রা ছেড়ে দেয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্থএকটি মহল ও আহসান আলীর নেতৃত্তে চোরাকারবারী ও সাংবাদিক নামধারী একটি সংঘবদ্ধ চক্র কমিশনার ও বেনাপোল কাস্টম হাউসের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও প্রতিশোধমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত আছে বলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়।
কেবল হয়রানি, শত্রুতামূলক প্রতিহিংসা চরিতার্থের জন্যে আহসান আলী দুদকের মতো জাতীয় প্রতিষ্ঠানের নাম, পদবী ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে নিজের উদ্দেশ্য হাসিল করতে চেয়েছেন। কোন প্রকার প্রামাণ্য তথ্য উপাত্ত ছাড়া কমিশনার মহোদয়ের বিরুদ্ধে বেনামী চিঠি দুদকসহ শতাধিক দপ্তর ও মিডিয়ায় বিতরণ করে বেনাপোল কাস্টম হাউস ও উচ্চ পদস্থ একজন কর্মকর্তার সম্মানহানি করা হয়েছে।
আহসান আলী সরকারের ২০ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার উদ্দেশ্যে কাগজপত্র জমা করা, কমিশনারের দপ্তরে সশরীরে এসে অবৈধ তদ্বিরসহ চাপ সৃষ্টি করা (ভিডিও সংযুক্ত), বেনামী অভিযোগ লিখে সশরীরে গিয়ে বিতরণ, সরকারের ৮০০ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি সাধন, আরো ক্ষতির প্রচেষ্টায় ধারাবাহিক লিপ্ত থাকে। তিনি দুদকের ভূয়া কর্মকর্তা মিথ্যা পরিচয় দিয়ে শুল্ক ফাঁকির জন্য অবৈধ তদ্বির ও চাপ প্রয়োগ, কমিশনারকে পরিকল্পিতভাবে ধারাবাহিক হয়রানি, কর্মকর্তাদের দুদকের ভীতি দেখিয়ে স্বার্থ হাসিল এবং সরকারী কাজে উপর্যুপরি বাধা সৃষ্টি করেছেন।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগের তদন্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। দীর্ঘ তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ মিথ্যা বলে তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
তাঁকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা নাহলে ভায়াগ্রা চক্রের দ্বারা কর্মকর্তারা আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্থ হবার সম্ভাবনা থাকায়, আটককারী কর্মকর্তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানির পরিমাণ ক্রমহ্রাসমান থাকায়, ভবিষ্যতে সমজাতীয় ভায়াগ্রা চালান আমদানির সম্ভাবনা রয়েছে, বেনাপোলের অধিকতর রাজস্ব ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া কর্মকর্তারা স্বাভাবিক কর্মকান্ড সম্পাদনে অদ্যাবধি আতংকে ভুগছে বিধায় দুদকের সাবেক উপ-পরিচালক আহসান আলী (মোবাইল নং- ০১৭৭০০২৯৪১০) এর বিরুদ্ধে এজাহার গ্রহণ ও তাকে গ্রেফতারের জন্য বন্দর থানায় মামলা করা হয়।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন খান জানান, বেনাপোল পোর্ট থানায় আহসান আলীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্তে প্রমানীত হলে তার বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বেনাপোল পোর্ট থানায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষের মামলা
পূর্ববর্তী পোস্ট