দেশের খবর: ক্যাসিনোসহ দুর্নীতির বিরোধী চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা বলেছেন, শেখ হাসিনা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যে অভিযান শুরু করেছেন সেটা শুধু ঢাকায় নয় সারাদেশে চলমান থাকবে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৩তম জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় নেতারা এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ‘দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ার জন্য শেখ হাসিনা মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সময় রেসকোর্স থেকে জুয়া খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, সেই আমলে একমাত্র হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিদেশিদের জন্য মদ পাওয়া যেত। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর পানের দোকানদারও মদ বিক্রি করতো। জিয়া মদের লাইন্সেস জাতীয়করণ করেছিল, সেই সময়ে হাউজি থেকে শুরু করে জুয়া খেলার সূত্রপাত্র হয়। আজকে বিএনপির বক্তৃতা শুনলে বোঝা যায়। তারা শেখ হাসিনার কাজকে সমালোচনা করছে, তারা সমর্থন করতে পারছেন না। কারণ তাদের আঁতে ঘা লাগছে। কারণ এই জুয়ার উৎপত্তি জিয়ার আমল থেকে। তাই তারা আগে থেকেই ডিফেনসিভে গিয়ে এটার সমালোচনা শুরু করেছে।’
উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আজকে কিছু অনুপ্রবেশকারী দলে প্রবেশ করে আমাদের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ বিশাল রাজনৈতিক দল, কত দল এদেশে এসেছিল কিন্তু আজকে খুঁজে পাওয়া যায় না, আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আমি বিশ্বাস করি যেভাবে জঙ্গি তৎপরতা নির্মূল করা হয়েছে, ক্যাসিনো-জুয়া এগুলোও তিনি (শেখ হাসিনা) বন্ধ করবেন। আমাদের সংবিধানে মদ ও জুয়া নিষিদ্ধ, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ, এগুলো জিয়ারউর রহমান চালু করেছিলেন।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্রুসেড শুরু করেছেন। দিস ইজ এ ক্রুসেড এগেইস্ট করাপশন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের জিততে হবে। অপকর্মের বিরুদ্ধে, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে, টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। এই অ্যাকশন শুধু ঢাকা শহরে নয়, সারা বাংলায় হবে। গুটি কয়েক অপকর্মকারী, দুর্নামকারী, দুর্নীতিবাজের জন্য গোটা পার্টির বদনাম হতে পারে না।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আমরা কী গুটি কয়েকের জন্য গোটা পার্টি এই বদনামের ভাগীদার হবো? আমাদের ইমেজকে যারা ড্যামেজ করছে, তাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার এ লড়াই, অ্যাকশন আপনারা সমর্থন করেন? সবাই ঐক্যবদ্ধ আছেন? তখন উপস্থিত নেতাকর্মীরা হাত তুলে সমর্থন জানান। অপকর্মকারীদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। তাদের জন্য এত উন্নয়ন, অর্জন ম্লান হতে পারে না। আমাদের নেত্রী কষ্ট করে, পরিশ্রম করে যে অর্জন করেছেন, তা আমাদের গুটি কয়েকের জন্য ম্লান হতে দিতে পারি না।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, কৃষিমন্ত্রী আবুদর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুন্নাহার চাঁপা, দেলোয়ার হোসেন, আফজাল হোসেন, বিপ্লব বড়ুয়া, এস এম কামাল হোসেন, রিয়াজুল কবীর কাওছার, আজমত উল্লাহ খান, গোলাম রব্বানী চিনু প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগ প্রচার সম্পাদক হাসান মাহমুদ এবং উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।