দেশের খবর: বিথী আক্তার (২৮)। ২০১০ সালে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন। পরে খোঁজ পাওয়া যায় পাশের দেশ ভারতের ত্রিপুরায় রয়েছেন তিনি। এ নিয়ে দুই দেশের সরকারের মধ্যে চিঠি চালাচালির দীর্ঘ নয় বছর পর সীমান্ত পেরিয়ে মায়ের কাছে আপনালয়ে ফিরেছেন বিথী।
এপারে এসে মা সাফিয়া বেগমকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের তৈরি হয়। মা-মেয়ের এ দৃশ্য দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন সেখানে উপস্থিত সবাই।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরের দিকে ভারতের ত্রিপুরার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহায়তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফেরেন বিথী। তিনি নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার পাচুয়া গ্রামের হিমায়েত খন্দকারের মেয়ে।
জানা যায়, ২০১০ সালে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন বিথী। পরে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধ্যান পায়নি। ২০১২ সালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ধলাই জেলার সালেমা থানা পুলিশ তার সন্ধান পায় এবং আদালতে হাজির করে। তবে মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় তিনি কীভাবে ত্রিপুরায় গেছেন সেই তথ্য কেউ জানাতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়। বিথী মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় ওই বছরের ১৭ মার্চ আদালতের নির্দেশে তাকে ধলাই জেলার মডার্ণ মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই তিনি এতোদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসা শেষে সুস্থ্য হওয়ায় ত্রিপুরার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহায়তায় বুধবার দুপুরে নিজ দেশে ফেরেন বীথি।
বিথীর মা সাফিয়া বেগম বলেন, এত বছর পর আমার মেয়ে ফিরে এসেছে। আমি ভারত এবং বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।
ত্রিপুরার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার কিরিটি চাকমা সাংবাদিকদের জানান, ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও পুলিশকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। তারা এ উদ্যোগ না নিলে বিথীর কী হতো সেটি আমরা জানি না।
এ সময় চেকপোস্টে ত্রিপুরার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রথম সচিব জাকির হোসেন ভূইয়া, দ্বিতীয় সচিব এস এম আসাদুজ্জামান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ২৫ ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ গোলাম কবির, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার রেইনা ও আখাউড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রসুল আহমদ নিজামী উপস্থিত ছিলেন।