রাজনীতির খবর: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় চার নেতাকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের চার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের জন্য সৎ এবং যোগ্য নেতা বাছাই করবেন তারা। দায়িত্বপ্রাপ্ত এই চার নেতার মধ্যে রয়েছেন দলের দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান এবং দুই সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
আগামী ২০-২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের আগে ৬ নভেম্বর কৃষক লীগ, ৯ নভেম্বর জাতীয় শ্রমিক লীগ এবং ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন হবে। ২৩ নভেম্বর হবে যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেস। এসব সংগঠনের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবক’টি সম্মেলনই হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
সাম্প্রতিক সময়ে এই চার সংগঠনের কোনো কোনো শীর্ষ নেতা নানা কারণে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন। যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাওসারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সম্মেলন সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথকে।যুবলীগ প্রেসিডিয়ামের দুই সদস্য শেখ ফজলুর রহমান মারুফ ও নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে নিষিদ্ধ হয়েছেন।
এ অবস্থায় যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ ও শ্রমিক লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে বিতর্কিত এবং প্রশ্নবিদ্ধ নেতাদের সরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নিয়ে গত মঙ্গলবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছেন। তিনি আলোচিত চার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের জন্য সৎ এবং যোগ্য নেতা বাছাই করতে অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, বিএম মোজাম্মেল হক এবং আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ আলোচনায় যুবলীগের জন্য সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব খুঁজতে অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানককে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান। স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব অনুসন্ধানের বিশেষ দায়িত্ব পেয়েছেন আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি। এই দুই সংগঠনের শীর্ষ নেতারাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে সবচেয়ে বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন। এ কারণে এই দুই সংগঠনের ভবিষ্যৎ নেতা নির্বাচনে সততা, যোগ্যতা, স্বচ্ছ ও উজ্জ্বল ভাবমূর্তির প্রসঙ্গ বিশেষভাবে প্রাধান্য পাচ্ছে।
গণভবনের আলোচনায় অংশ নেওয়া কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, ওমর ফারুক চৌধুরীর অপকর্মের বিষয়গুলো আগে থেকে না জানানোয় বৈঠকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিস্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের গ্রেপ্তার এবং ক্যাসিনোকাণ্ডে তাকে নেপথ্যে থেকে কোন কোন নেতা ইন্ধন জুগিয়েছেন, সেসব নিয়েও এ বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। সূত্র: সমকাল