দেশের খবর: ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও সাবেক প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সাবেক এপিএস সত্যজিৎ মুখার্জিকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে তাকে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৪৪ হাজার ১৭৬ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গত ১৪ নভেম্বর সত্যজিৎ মুখার্জির বিরুদ্ধে দূর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা এক মামলার রায়ে ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক জয়নাল আবেদীন এ রায় ঘোষণা করেন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রসিকিউটর রেজাউল করিম রেজা সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, রায়ের সময় আসামি সত্যজিৎ মুখার্জি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৯ জুন ঢাকার রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক কেএম মিছবাহ উদ্দিন।
দুদকের সেই মামলায় ১ কোটি ৩৯ লাখ টাকার অধিক অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতার কারাদণ্ড দিলেন আদালত।
রায় ঘোষণার সময় সত্যজিৎ মুখার্জি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। রায়ে সত্যজিৎকে ৬০ দিনের মধ্যে জরিমানার অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়েছে।
অন্যথায় ফৌজদারি কার্যবিধির বিধান মতে জরিমানা আদায় করবেন জেলা কালেক্টর।
সত্যজিৎ মুখার্জি ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকার মানষ মুখার্জির ছেলে। দুর্নীতির কারণেই এপিএস পদ থেকে সত্যজিৎকে অপসারণ করেন সাবেক প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
দুদকের মামলায় বলা হয়, ২০১৫-১৬ করবর্ষ পর্যন্ত দুদকের অনুসন্ধানে এপিএস সত্যজিত মুখার্জির মোট দুই কোটি ৫৪ লাখ ৭৪ হাজার ৫৪৯ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়। যার মধ্যে ২০১৫ সালের ৩০ আগস্টে তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে আয় বাবদ এক কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৩৬৩ টাকার সম্পদ দেখা যায়।
বাকি এক কোটি ৩৯ লাখ ৪৪ হাজার ১৭৬ টাকার সম্পদ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত হিসেবে প্রমাণিত হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৯ জুন ঢাকার রমনা মডেল থানায় দুদকের উপপরিচালক কেএম মিছবাহ উদ্দিন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
একই কর্মকর্তা তদন্ত শেষে পরের বছর ২৩ জুলাই আদালতে চার্জশিট দেন।
পরবর্তীতে মামলার বিচারকালে ছয়জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। ১৪ নভেম্বর মামলার রায় দেন বিচারক।
এর আগেও ২০১৫ সালে ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে এই সত্যজিৎ মুখার্জির বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা হয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
‘প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রীর সাবেক এপিএসের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা’ শিরোনামে সেই রিপোর্টে প্রকাশিত মামলার এজাহারে বলা হয়, সেই বছরের ৫ জানুয়ারি টেকনো মিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক যশোদা জীবন দেবনাথের পুরানা পল্টনস্থ অফিসে গিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন সত্যজিৎ মুখার্জি।
ওই ঘটনার কিছু দিন পর তৎকালীন প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী সত্যজিৎকে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও নানা অপকর্মের দায়ে এপিএসের পদ থেকে অব্যাহতি দেন।