অনলাইন ডেস্ক : অধিকৃত কাশ্মীরে হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকারের নেয়া পদক্ষেপকে ইসরাইলের ফিলিস্তিন দখলের সঙ্গে তুলনা করে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছেন ভারতীয় এক কূটনীতিক। নিউইয়র্ক সিটিতে ভারতীয় দূতাবাসের একটি অনুষ্ঠানে সন্দীপ চক্রবর্তী নামে ওই কূটনীতিকের মন্তব্য নিয়ে নতুন বিতর্ক দেখা দিয়েছে।ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, নিউইয়র্কে নিযুক্ত ভারতের কনসাল জেনারেল সন্দীপ চক্রবর্তী কাশ্মীরের প্রবাসী পণ্ডিতদের নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমাদের সামনে ইতিমধ্যে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত রয়েছে…যদি ইসরাইলি জনগণ পারে…’। নিউইয়র্কে শনিবার হিন্দু পুরোহিত ও প্রবাসী ভারতীয়দের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সদ্বীপ বলেন, ফিলিস্তিনের জমিতে ইসরাইল যেভাবে বসতি স্থাপন করেছে, একইভাবে কাশ্মীরে বসতি স্থাপনই সংকটের একমাত্র সমাধান। কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজেপি সরকারের বাড়াবাড়িকে হালকা প্রমাণ করতে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের আগ্রাসন উদাহরণ দেয়ার পরই এই আলোচনার ঝড় উঠেছে।কাশ্মীরের স্বায়ত্বশাসন বাতিলের পর সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দশা এখন ফিলিস্তিন কিংবা মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের মতো হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করেছিলেন। যদিও ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তুলনাকে অস্বীকার করে ওই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ভারতীয় ওই কূটনীতিক ‘কাশ্মীরি সংস্কৃতিকে হিন্দু সংস্কৃতি’ মন্তব্য করে বলেন, বিতাড়িত কাশ্মীরি পণ্ডিতরা খুব তাড়াতাড়ি কাশ্মীরে ফিরে আসতে পারবেন। সন্দীপ চক্রবর্তী বলেন, কেউ (শ্রোতাদের মধ্যে) ইহুদি ইস্যু সম্পর্কে, ইসরাইলের ইস্যু সম্পর্কে নানা কথা বলেছেন। তারা তাদের সংস্কৃতিকে নিজেদের ভূমির বাইরেও দুই হাজার বছর বাঁচিয়ে রেখেছে। তাই আমি মনে করি, আমাদেরও উচিত কাশ্মীরী সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা, কাশ্মীরী সংস্কৃতি হলো ভারতীয় সংস্কৃতি। এটা হিন্দু সংস্কৃতি। উপস্থিত পণ্ডিতদের ইসরাইলি মডেল অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে সন্দীপ আরও বলেন, ‘আমি সবসময় মনে করি, আমরা আমাদের জমি (কাশ্মীরে) ফেরত পাবো এবং আমাদের মানুষেরা (পণ্ডিতরা) ফিরে যাবে। আমাদের কাশ্মীরী ভাইয়েরা এখন বিভিন্ন অঞ্চলে শরণার্থী শিবিরে রয়েছে,… তারা অবশ্যই নিজেদের ঘরে ফিরে যাবেন। এক্ষেত্রে আমাদের কাছে মধ্যপ্রাচ্যে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত আছে…ইসরাইলি জনগণ যদি পারে, তবে…। ওই অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।
মোদি সরকারের পদক্ষেপ কাশ্মীরে হিন্দুত্ববাদী সংস্কৃতির বীজবপণ করছে, সন্দীপ চক্রবর্তীর এই বক্তব্যে সেটিই ফুটে ওঠেছে বলে মনে করছেন সমালোচকরা।