বিদেশের খবর: আসাম, মেঘালয় ও পশ্চিমবঙ্গের পর ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দিল্লি, উত্তর প্রদেশ ও লখনৌতে ছড়িয়ে পড়েছে। দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে ভারতের ছাত্র সমাজ।
শুধু ছাত্ররাই নয়, বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন দেশটির বিভিন্ন স্তর ও ধর্মের লোকজন। বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনবিরোধী বিক্ষোভ ইতোমধ্যে রূপ নিয়েছে গণআন্দোলনে। অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এ নিয়ে শুনানী আগামীকাল।
দিল্লির জামিয়া ও আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সন্ধ্যা থেকে বিক্ষোভ শুরু হয় দিল্লির জওহরলাল নেহরু থেকে শুরু করে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। মধ্যরাতেই গর্জে ওঠে হায়দ্রাবাদের মৌলানা আজাদ উর্দু বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। সকাল থেকেই জামিয়ার শিক্ষার্থীদের সমর্থনে বিক্ষোভে নামে টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সাইন্স, আইআইটি মুম্বাই ও লখনৌর নাদওয়া বিশ্ববিদ্যালয়।
রোববার দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার লোক প্রতিবাদে অংশ নেয়। এক পর্যায়ে শুরু হয় সংঘর্ষ। সেসময় বাস, গাড়ি ও মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি পেটা ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ শুরু করে। প্রতিবাদকারীরা পিছু হটে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে পাথর ছুড়তে শুরু করলে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে সংঘর্ষে জড়ায়।
স্থানীয় দুটি হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংঘর্ষের পর শতাধিক আহতকে তাদের হাসপাতালে আনা হয়েছে।
অন্যদিকে দিল্লিতে ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ চলাকালে একটি বাসে পুলিশের আগুন লাগানোর ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযোগ উঠছে, পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপ হয়ে ওঠে সেজন্য কিছু বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে পুলিশই। তবে দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিইয়া ও পুলিশের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে অনশনে বসছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিএম নেতা পিনারাই বিজয়ন, বিরোধী দলনেতা রমেশ চেনিথালাসহ একাধিক বিশিষ্টজনেরা।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধীতা করায় তার বিরুদ্ধে আদালতে যাবার কথা জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এই ইস্যুতে তৃণমূলের র্যালির সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।