রাজনীতির খবর: আগামী ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক থেকে পূর্ণ দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন ছাত্রলীগের দুই শীর্ষনেতা আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য।
ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কার্যক্রমে সংগঠনের প্রায় সবাই সন্তুষ্ট। সব শেষ বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশের অভিযোগে ৩২ কেন্দ্রীয় নেতাকে বহিষ্কার করে নেতাকর্মীদের কাছে নিজেদের আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলেছেন তারা।
নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ হারান রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানী।
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে লেখক ভট্টাচার্য দায়িত্ব পান।এর পর পেরিয়ে গেছে তিন মাস। ইতোমধ্যে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও সাদাসিধে জীবনাচরণ আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের নজর কেড়েছে। ছাত্রলীগের দেখভালের দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের চার নেতাও জয় ও লেখককে পূর্ণ দায়িত্ব অর্পণের বিষয়ে ইতিবাচক।
সূত্রমতে, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বা কয়েক দিন পরই তাদের পূর্ণ দায়িত্ব অর্পণের ঘোষণা আসতে পারে।
পূর্ণ দায়িত্ব পাচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, আমরা এসব নিয়ে ভাবছি না। আমাদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করছি। আপার বিশ্বাসের মর্যাদা কখনই ভঙ্গ করব না।
ছাত্রলীগের ১১১টি ইউনিটের মধ্যে ১০৯টির কমিটিই মেয়াদোত্তীর্ণ। এ নিয়ে কিছুটা অসন্তোষ রয়েছে। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ও মহানগরে নেতৃত্ব জটের কারণে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। একই অবস্থা ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণেও। নেতাকর্মীরা চাচ্ছেন দ্রুত এসব কমিটি পুনর্গঠন হোক। কিন্তু গত তিন মাসে নড়াইল জেলা ছাড়া অন্যকোনো ইউনিটে কমিটি দিতে পারেননি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। নেতাকর্মীদের ধারণা, বিভিন্ন ইউনিট কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে হয়তো তারা নির্দেশনা পাননি। এ ছাড়া নতুন সম্মেলন হতে পারে এমন ভাবনাও রয়েছে। ফলে অনেকটা দ্বিধাগ্রস্ত কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা। বিষয়টি আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডও অবগত। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই পূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে জয় ও লেখককে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য জানান, জয়-লেখকের গত তিন মাসের কার্যক্রমে সন্তুষ্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। অনাড়ম্বর জীবনযাপন, হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো অবস্থান, নিয়মিত মধুর ক্যান্টিনে যাওয়াসহ সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি সম্পর্কেও প্রধানমন্ত্রী অবগত।
এদিকে আগামী ৪ জানুয়ারি সংগঠনের ৭২ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পুনর্মিলনীর আয়োজন করেছে ছাত্রলীগ। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে কেন্দ্রের আওতাভুক্ত বিভিন্ন কলেজ ও ইউনিটের শীর্ষনেতাদের নিয়ে জরুরি সভা। আজ শুক্রবারও ঢাকার আশপাশের জেলা ও মহানগরের নেতাদের নিয়ে পুনর্মিলনী সফল করতে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হবে।