কলারোয়া প্রতিনিধি: কলারোয়ায় সরিষা ফুলের গন্ধে মৌ-মৌ ফসলী মাঠ। আর মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌ চাষীরা। ছয় ঋতুর এই দেশে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে বদলে যায় ফসলের মাঠের চিত্র। এর ধারাবাহিকতায় সবুজ মাঠ হয়েছে হলুদে ভরপুর। গত ২দিনে ছিটেফোঁটা বৃষ্টিতেও সরিষার হলুদ ফসলী মাঠ অন্যরকম দৃশ্যে রূপ নিয়েছে। এবার শীতে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য পাল্টে দিয়েছে কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলের মাঠ। উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় এ মৌসুমে সরিষার চাষ করতে দেখা গেছে। চারিদিকে এখন শুধু হলুদ সরিষা ফুলের বর্ণিল সমারোহ। মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের মৌ-মৌ গন্ধ। মৌমাছির গুন গুন শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে ধেয়ে চলার অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য মনোমুগ্ধকর। গত কয়েকদিনের সকালের মিষ্টি রোদ আর বিন্দু বিন্দু শিশির ছুঁয়ে যায় ফুলগুলোকে। সরিষা ফুলের হলুদ হাসিতে রঙিন এখন কলারোয়া পৌরসদরের পাশাপাশি উপজেলার কেরালকাতা, জয়নগর, দেয়াড়া, হেলাতলা, চন্দনপুর, সোনাবাড়িয়া, লাঙ্গলঝাড়া, কেঁড়াগাছি, কুশোডাঙ্গা, জালালাবাদ, কয়লা, যুগিখালী ইউনিয়নের বিস্তির্ন ফসলের মাঠ। সরিষার ফুল যেন দিক-দিগন্ত রাঙিয়ে দিয়েছে। প্রকৃতি যেন হলদে শাড়ি পরা তরুণীর সাজে সজ্জিত হয়ে নতুন রূপে আবির্ভূত হয়েছে। শনিবার সকালে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মহাসীন আলী জানান- সরিষা চাষে খরচ কম, কিন্তু লাভ বেশি। ফলে কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী। এ মৌসুমে অনেক কৃষক সরিষা ক্ষেতে শাক উৎপাদন করেও আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার প্রত্যাশা করছেন। সরিষার তেলের চাহিদা থাকে সারা বছর। তাই সারা বছরই থাকে সরিষার চাহিদাও। দামও পাওয়া যায় ভালো। অনেক এলাকাতেই ধানসহ অন্যান্য ফসল চাষে খরচ বেড়ে যাওয়া সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন চাষীরা। বিগত বছরগুলোতে সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ায় এবারো বেড়েছে সরিষার চাষাবাদ। তাই চলতি মৌসুমে পাল্টে গেছে উপজেলার দিগন্তজোড়া মাঠের চিত্রও। এদিকে, সরিষা চাষাবাদের সময় মাঠজুড়ে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করেন মৌ-বা-মধুচাষীরা। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সরিষা ক্ষেতের এক পাশে কিংবা মাঝ বরাবর মধুচাষীর অনেক গুলো বাক্স নিয়ে শুরু করেছেন মধু সংগ্রহের কাজ। মৌমাছি সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে বাক্সে এনে মৌ-চাকে জমা করে, বাক্সে থাকে রাণী মৌমাছি। কয়েকজন মৌ-চাষী প্রতিবেদককে জানান- প্রতি সরিষা মৌমুমে মধু সংগ্রহ ও ব্যবসা চলে রমরমা। অন্যান্য বছর এ মৌসুমে মধু সংগ্রহ ও বিক্রি করে তারা অর্থ উপার্জন করে থাকেন। তারা আরো জানান- মৌ-চাষে খরচ কম, লভ্যাংশ বেশি। তাই এ ব্যবসায় বেকার লোকজন তাদের কর্মসংস্থান তৈরির সুযোগ পাচ্ছেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট