স্বাস্থ্য ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া উচ্চ সংক্রামক নভেল করোনাভাইরাস ড্রপলেটের (থুতু বা কফের ফোঁটা) মধ্যে বাতাসে একাধিক ঘণ্টা এবং কোনো বস্তুর ওপর কয়েক দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত নতুন এসব তথ্য উঠে এসেছে। নতুন এ গবেষণা করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট কোভিড-১৯ রোগ থেকে বাঁচতে দিকনির্দেশনা দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসের বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসের জীবনকাল নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন। গবেষণার অংশ হিসেবে করোনায় আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির কাশি বা স্পর্শ থেকে বাসাবাড়ি কিংবা হাসপাতালে থাকা পরিচিত বস্তু বা দ্রব্যের ওপর জীবাণু কত সময় পর্যন্ত সংক্রমণক্ষম থাকতে পারে, তা পরীক্ষা করা হয়। কাশি বা হাঁচি দিলে যেভাবে ড্রপলেটের মাধ্যমে জীবাণু ছড়ায়, গবেষকরা সেভাবে অ্যারোসলের মাধ্যমে বিভিন্ন বস্তুর ওপর করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পরীক্ষা করেন।
ওই পরীক্ষার ফল মঙ্গলবার নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত হয়। তাতে দেখা যায়, হাঁচি বা কাশি দেওয়ার ফলে ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস অন্তত তিন ঘণ্টা পর্যন্ত সংক্রমণক্ষম থাকতে পারে।
বস্তুভেদে ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতার সময়কালে হেরফের হতে পারে। যেমন—প্লাস্টিক ও ইস্পাতের ওপর ভাইরাসটি তিন দিন পরও থেকে যেতে পারে। আবার শক্ত কাগজের কার্ডবোর্ডের ওপর ২৪ ঘণ্টার বেশি ভাইরাসটি সংক্রমণক্ষম থাকে না। আর তামার ওপর চার ঘণ্টা পর্যন্ত সংক্রমণক্ষম থাকে করোনাভাইরাস। তবে সব মিলিয়ে ৬৬ মিনিটের মধ্যে ভাইরাসের চার ভাগের তিন ভাগ উপাদান অকার্যকর হয়ে পড়লেও ২৫ শতাংশ উপাদান কর্মক্ষম থাকে।
গবেষণায় দেখা যায়, ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ানোর তিন ঘণ্টা পরও ভাইরাস সংক্রমণের সাড়ে ১২ শতাংশ উপাদান কর্মক্ষম থাকে।
এছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, ইস্পাতের ওপর পড়া ভাইরাসের উপাদানের অর্ধেক অকার্যকর হতে সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট। অন্যদিকে প্লাস্টিকের ক্ষেত্রে লাগে ছয় ঘণ্টা ৪৯ মিনিট।
করোনাভাইরাসের উপাদান অর্ধেকে নেমে আসতে সবচেয়ে কম সময় নেয় তামার ওপর পড়লে। তামার ওপর পড়া ভাইরাসের অর্ধেক উপাদান অকার্যকর হয়ে পড়ে ৪৬ মিনিটের মধ্যে।
রকি মাউন্টেন ল্যাবরেটরিজের এনআইএআইডি’র মন্টানা ফ্যাসিলিটির নেলটজে ভ্যান ডোরম্যালেনের নেতৃত্বে গবেষণা অনুসারে, তিন ঘণ্টা পর ভাইরাসের কণার কার্যকারিতা ১২.৫ ভাগে নেমে আসে।