আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনিতে ইউপি সদস্য হাফেজ রুহুল আমিন ও গ্রাম পুলিশ জেনারুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এর কার্যালয় লিখিত অভিযোগ। মঙ্গলবার দুপুরে এ লিখিত অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১০/০৬/২০২০ বুধবার ফকরাবাদ গ্রামের মৃত জমাত আলী বিশ্বাসের পুত্র গ্রাম পুলিশ (দফাদার) মোস্তাজুল হক (৪৯) বাদী হয়ে আশাশুনি থানায় একটি ডায়রী করেন যার নাং (৪০২)। বড়দল ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও জামায়াত নেতা রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা, অসহায় গরীব দুঃখী মানুষ, খেটে খাওয়া দিন মজুর, ভ্যান চালক ও স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এবং কর্মসৃজন কর্মসূচির কাজ, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃত্ব ভাতা ভি,জি,ডি, কার্ড সরকারী ঘরসহ সকল প্রকার সরকারী সাহায্যের নামে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন। অভিযোগ ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মরণঘাতি করোনাভাইরাস ও ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া অসহায় মানুষের ত্রাণ সামগ্রী বিতরনের নামে সরকারের দেওয়া অনুদান আত্মসাৎ করেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার সম্মান অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে গত ১৪/০৫/২০২০ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম মোল্ল্যাকে অবহিত করা হলে তিনি তাকে বলেন, টাকা-পয়সা আমাদের খেতে হবে তোমার যা ইচ্ছা তুমি তাই করো।
এদিকে জামায়াত নেতা হাফেজ রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের কাছে ভিডিও বক্তব্যে বলেন, ফকরাবাদ গ্রামের খানজাহান গাজী (খানজি) এর বাক প্রতিবন্ধী মেয়ের ৩০ কেজি চাউলের কার্ড করে দেবে বলে ৩ হাজার টাকা দাবি করেন। একই গ্রামের আলিমুদ্দিন মোড়লের পুত্র সানাউল্লার কাছ থেকে ৩০ কেজি চাউলের কার্ড বাবদ ৩ হাজার টাকা, মৃত নওশের আলী গাজীর পুত্র মান্নান গাজীর কাছ থেকে জেলা পরিষদের গাছ বিক্রয়ের কথা বলে ২৬ হাজার টাকা, বুড়িয়া গ্রামের পাগলা গাজীর পুত্র বাক প্রতিবন্ধী মোসলেম গাজীর কাছ থেকে প্রতিবন্ধীর কার্ড করার কথা বলে ৩ হাজার ৫০০ টাকা, একই গ্রামের মৃত রাজ্জাক গাজীর স্ত্রী সকিনা’র কাছ থেকে ঘর দেওয়ার কথা বলে ১৮ হাজার টাকা, আসাদ গাজীর পুত্র শহীদ গাজীর কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা, শ্রীপদ রায়ের স্ত্রীর পেগনেন্ট এর কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে ৬ হাজার টাকা, আনার আলী সরদারের কন্যা চায়না’র কাছ থেকে কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে ৫০০ টাকা, কবির আহমেদ মোল্ল্যার স্ত্রী জোহরা খাতুন’র কাছ থেকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে ৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও অডিও এবং ভিডিও সহ একাধিক তথ্যপ্রমাণ আছে বলে জানিয়েছেন। ভিজিএফ, ভি,জি,ডি, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড প্রতি ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা নেওয়া, ঈদুল ফিতরের চাউল কূটকৌশলে ৫ থেকে ১০ নামের স্লীপ করে চাউল বাড়ি নেওয়া এবং এলাকায় জুয়া খেলানো ও টাকার বিনিময় বাল্যবিবাহ দেওয়া সহ বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। উল্লেখ্য ২০১৯ সালে ঈদুল ফিতরের চাউলে দুর্নীতি করায় সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক দৃষ্টিপাত সহ বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা নিউজ হয় তারপরেও থেমে থাকেনি দুর্নীতি ও অনিয়মের কাজ। এলাকার গরীব অসহায় ব্যক্তিদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের সরকারী কার্ড ও অনুদান দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অদৃশ্য শক্তি খাটিয়ে দুর্নীতি করেছেন। দুর্নীতিকারী হাফেজ রুহুল আমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউএনও, পিআইও, ট্যাগ অফিসার, পুলিশ প্রশাসনসহ ইউপি চেয়ারম্যানকেও আমাকে টাকা দেওয়া লাগে এমনকি প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে যেয়ে বিভিন্ন কম্পিউটারে আমাকে ১৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকার সচেতন মহলসহ অসহায় ও প্রতিবন্ধীরা।