অনলাইন ডেস্ক : গ্রেপ্তারের পর রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. শাহেদ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব কর্মকর্তাদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছেন, আমাকে ছয় মাসের বেশি সময় আটকে রাখতে পারবেন না।
বুধবার (১৫ জুন) সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনার পর শাহেদকে র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি র্যাব কর্মকর্তাদের উদ্দেশে একথা বলেন।
এটি নিশ্চিত করেছেন শাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদের যুক্ত একাধিক কর্মকর্তা । তারা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় শাহেদ অনেকটাই নির্ভার ছিলেন। এ সময় বেশ কয়েকবার দম্ভোক্তি করেন তিনি।
শাহেদ নিজেকে একটি পত্রিকার মালিক ও সম্পাদক দাবি করে বলেন, সবই আমার পর্যবেক্ষণে আছে। যেসব সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদকর্মীরা তার ছবি তুলছে এবং সংবাদ প্রকাশ করছে তাদেরও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তিনি।
শাহেদের আত্মগোপন করা প্রসঙ্গে র্যাবের মহাপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মামলা হওয়ার পরপরই সাহেদ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আত্মগোপনের চেষ্টা চালান। ঢাকা থেকে তিনি কুমিল্লা, কক্সবাজার ও সাতক্ষীরায় গিয়েছেন। গত সাত–আট দিনের মধ্যে সাহেদ একাধিকবার ঢাকায়ও এসেছেন। কখনো নিজস্ব গাড়িতে যাতায়াত করেছেন, কখনো ভাড়া গাড়ি, কখনো ট্রাকে আবার কখনো পায়ে হেঁটেও এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করেছেন।
র্যাবের সদর দপ্তরে বুধবার অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র্যাব ডিজি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজকে গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সম্ভাব্য কোন কোন পথে দেশ ছাড়তে পারেন, সে সম্পর্কে র্যাবকে ধারণা দেন। ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযানের পর থেকে সাহেদ করিম গা ঢাকা দেন। তাঁর সন্ধানে র্যাব ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অভিযান চালায়। বুড়িমারি, সাপাহার সীমান্ত ও সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকায়ও র্যাব নজরদারি বাড়ায়। এই কাজে র্যাবকে সহযোগিতা করে পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ডসহ অন্যান্য বাহিনী।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ এখনো শেষ হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আরও অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, শাহেদ একজন ঠান্ডা মাথার প্রতারক। তিনি আগেও জেলে গেছেন। ফলে আইনি বিষয়গুলো তার ভালোভাবেই জানা। সে নানা সময় নানা কথা বলছে। বিভ্রান্তিকর তথ্যও দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা শাহেদের অপকর্মের সহায়তাকারী কিছু দালালের খোঁজ পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনার পর র্যাব প্রথমে মো. শাহেদ ওরফে সাহেদ করিমকে র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ২০ নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে অভিযান চালায়। ওই গোপন অফিস থেকে নকল পাঁচ লাখ টাকার নোট উদ্ধার হয়।
মো. শাহেদ ওরফে সাহেদ করিম উত্তরা পশ্চিম থানায় র্যাব–১–এর করা মামলার এক নম্বর আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে সনদ ছাড়া হাসপাতাল চালানো, সরকারের সঙ্গে চুক্তি ভেঙে টাকার বিনিময়ে নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসা এবং পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়।সূত্র:পূর্বপশ্চিমবিডি