দেশের খবর : রাজধানীর হাতিরপুলে স্যানিটাইজার ঢালতে গিয়ে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়েছেন চিকিৎসক দম্পতি রাজীব ভট্টাচার্য ও অনুসূয়া ভট্টাচার্য।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে হাতিরপুলের বাসায় স্যানিটাইজারের একটি বোতল থেকে অন্য বোতলে কিছুটা ঢেলে নিচ্ছিলেন ডা. রাজীব। তখন হঠাৎ বোতল থেকে পড়ে যাওয়া স্যানিটাইজার আগুনের সংস্পর্শে আসে। মুহূর্তে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। এতে মারাত্মক দগ্ধ হন রাজীব। তাকে বাঁচাতে গিয়ে স্ত্রী অনুসূয়াও দগ্ধ হন।
দুজনকেই উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। সঙ্কটাপন্ন রাজীবকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
ডা. রাজীব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক। আর ডা. অনূসূয়া কাজ করেন শ্যামলীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তারা হাতিরপুল এলাকার ইস্টার্ন প্লাজার পেছনের একটি বাড়ির তৃতীয় তলায় থাকেন। সেখানেই দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে জানান তাদের স্বজনরা।
এদিকে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয় তা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। কলাবাগান থানার ওসি পরিতোষ চন্দ্র বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সংগ্রহ করা হয়েছে প্রয়োজনীয় আলামত। প্রাথমিকভাবে সিগারেট থেকে আগুনের সূত্রপাত হওয়ার তথ্য মিলেছে। তবে তদন্তের আগে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে তদন্ত কার্যক্রম চালানো হবে। ঘটনার সময় চিকিৎসক দম্পতি ছাড়াও ডা. অনুসূয়ার বাবা ওই বাসায় উপস্থিত ছিলেন। তার ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে দগ্ধ অবস্থায় তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। শরীরের ৮৭ ভাগই পুড়ে যাওয়ায় রাজীবের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। তার স্ত্রী অনুসূয়ার শরীরের ২০ ভাগ পুড়েছে। তার অবস্থাও গুরুতর। কেউ বিপদমুক্ত নয়। তাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
রাজীবের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সুদীপ দে জানান, বাসায় ব্যবহারের জন্য একটি বড় বোতলে স্যানিটাইজার রাখা ছিল। সেটি থেকে ছোট বোতলে খানিকটা জীবাণুনাশক ঢালছিলেন রাজীব। ওই সময় বোতল থেকে স্যানিটাইজার পড়ে যায়। তখন রাজীব ধূমপান করছিলেন। তার সিগারেট থেকে স্যানিটাইজারে আগুন ধরে যায়।
এই দম্পতির পাঁচ বছর বয়সী একমাত্র মেয়ে রাজশ্রী ঘটনার সময় বাসায় ছিল না। করোনা পরিস্থিতির কারণে তিন সপ্তাহ আগে তাকে কুমিল্লার দেবীদ্বারে দাদার বাড়িতে পাঠানো হয়।
পূর্ববর্তী পোস্ট