নিজস্ব প্রতিনিধি : মামলা পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে স্ত্রীকে ফুসলিয়ে নিয়ে ভাড়া বাসায় রেখে স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব থেকে প্রায় আট লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করা হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠণিক সম্পাদক ও শহরের রসুলপুরের হাসানুজ্জামান ডাবলু বাদি হয়ে শুক্রবার বিকেলে এ অভিযোগ দায়ের করেন।
মামলার অন্য আসামীরা হলেন, সদরের ওয়ারিয়া গ্রামের আকাশ, নুরুল উল্লাহ, বিপাশা ও লতিফের পিওন পলাশ।
জেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও শহরের রসুলপুরের জামের আলীর ছেলে হাসানুজ্জামান ডাবলু জানান,সদর উপজেলার ওয়ারিয়া গ্রামের বিপাশা বিশ্বাসের সঙ্গে ১৫ বছর আগে তার বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের ১২ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। দু’ বছর আগে তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। এর কিছুদিন পর তার স্ত্রী বিপাশা বিশ্বাস জনৈক নজরুল ও রবিউলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী হওয়ার সুবাদে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের বর্তমান পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ কৌশলে তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলে রসুলপুর পুলিশ লাইন এলাকার ব্যাংক কর্মকর্তা মারুফ হোসেনের বাড়ির তিনতলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে রেখে দেয়। এ বাসায় থেকে লতিফ বিপাশার সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা ও যৌন সঙ্গম করতে থাকে। ভারত থেকে ফিরে তিনি স্ত্রীর সন্ধান না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে বিপাশা ও লতিফের মোবাইল কললিষ্ট যাঁচাই করে লতিফের সঙ্গে তার স্ত্রীর সম্পর্কের বিষয়টি নিশ্চিত হন। ফলে গত বৃহষ্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি বিপাশার বাসায় যেয়ে আব্দুল লতিফকে একই বিছানায় অবস্থান করতে দেখেন। প্রতিবাদ করায় লতিফ মোবাইল ফোনে আকাশ, নুরুল উল্লাহ বিশ্বাস ও পলাশকে ডাকে। এরপর তিনি বিপাশার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে লতিফ রান্না ঘরে যেয়ে ছোট বটি এনে তার হাতে কোপ মারলে দু’টি আঙুল কেটে মারাত্মক জখম হয়। পরে আকাশ, নুরুল উল্লাহ, পলাশ তাকে মারপিট করে। মারপিটের সময় বিপাশা তাকে জাপটে ধরে রাখে। লতিফ তার প্যান্টের পকেটে থাকা ট্রাক ভাড়ার ৫৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। স্থানীয়রা তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে তাকে চিকিৎসা করায়। স্ত্রী বিপাশার নামে স্ট্যাণ্ডার্ড ব্যাংকে থাকা দু’ লাখ ৪০ হাজার টাকা, জনতা ব্যাংকে থাকা তিন লাখ টাকা ও আল আরাফা ব্যাংক থেকে স্ত্রীর নামে থাকা আড়াই লাখ টাকা অর্থাৎ তিন ব্যাংকে থাকা সাত লাখ ৯০ হাজার টাকা লতিফ আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে থানায় যেয়ে কর্তব্যরত অফিসারের কাছে তিনি একটি এজাহার দায়ের করেছেন। তবে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওই সময় উপস্থিত না থাকায় এজাহারটি রেকর্ড করা যায়নি।
জানতে চাইলে অ্যাড. আব্দুল লতিফ শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, বিপাশাকে নির্যাতন করতো ডাবলু। এ কারণে ছয় মাস আগে বিপাশা তার স্বামীকে তালাক দেয়। বিপাশা তার বন্ধুর মেয়ে বিধায় তাকে মা বলে ডাকেন। কোর্টের অ্যাড. ওসমান গণি ও সাহেদ তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আল্লাহ এর বিচার করবেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সাংবাদিকদের বলেন, বিপাশা তিন মাস আগে ডাবলুকে তালাক দিয়েছে বলে জেনেছেন তিনি। এছাড়া তার স্ত্রী বিপাশা তার বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলাও করেছেন। তবে ডাবলুর দেওয়া এজাহারটি তিনি শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত হাতে পাননি। হাতে পেলে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নেবেন।
তালাকের বিষয়ে বাদী হাসানুজ্জামান ডাবলু বলেন, তালাকের কোন খবর আমি পাইনি। আর স্ত্রী বিকাশাকে নির্যাতনের বিষয়টিও মিথ্যা।
পূর্ববর্তী পোস্ট