শিক্ষা ডেস্ক : করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারে ফেব্রুয়ারিতে। খোলার পর কিভাবে ক্লাসে অংশ নেবে শিক্ষার্থীরা তার একটি পরিকল্পনা সংসদে উপস্থাপন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, যদি ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়, তাহলে প্রাথমিকভাবে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়মিত ক্লাস হবে। অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন করে ক্লাসে আসবে। তারা পুরো সপ্তাহের পড়া নিয়ে যাবে। পরের সপ্তাহে আবার এক দিন আসবে।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে তিনটি বিল পাস হয়। এ আইন প্রণয়নের আলোচনায় সাংসদদের বক্তব্যের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এ তথ্য জানান।
দীপু মনি বলেন, ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক। শ্রেণিকক্ষে তাদের গাদাগাদি করে বসতে হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসানো সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনার সুযোগ থাকবে না।
নিয়মিত করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দীপু মনি বলেন, এ বছর যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী, তারা এক বছর সরাসরি ক্লাস করতে পারেনি। অনলাইন ও টিভিতে অনেকে ক্লাস করেছে। কিছু শিক্ষার্থী একেবারেই ক্লাস করেনি। এ বছরের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়, তাহলে পরে কয়েক মাস সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর পাঠদান শেষে পরীক্ষা নেওয়া যাবে।
দ্রুতই গেজেট প্রকাশের পর এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতিতে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটির ঘোষণা আছে। সরকার গত ২৯ মার্চ থেকে মাধ্যমিকের এবং ৭ এপ্রিল থেকে প্রাথমিকের রেকর্ড করা ক্লাস সংসদ টেলিভিশনে প্রচার করছে। কিন্তু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা মনে করেন, মন্দের ভালো হিসেবে এই পদ্ধতি চালু হলেও এটি কার্যকর ফল দিচ্ছে, তা বলা যাবে না। এই পদ্ধতিতে কেবল ক্লাস অনুসরণ করা যায়, শিক্ষার্থীরা সরাসরি অংশ নিতে পারে না। এ কারণে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই আস্তে আস্তে এই প্রক্রিয়া থেকে সরে গেছে।
করোনার কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। একই সঙ্গে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। এ গাইডলাইন অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিকল্পনা করা হয়েছে প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার।