বেশ কয়েক দিন ধরেই হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতার বাসিন্দা জয়নারায়ণ পান্ডে। কয়েক দিন ধরে অবস্থা একটু ভালোর দিকে হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে রেখেই বাড়িতে গিয়েছিলেন স্বজনরা। বুধবার সকালে হঠাৎ হাসপাতাল থেকে ফোন। জয়নারায়ণ পান্ডে আর নেই!
মৃত্যুসংবাদে মুহূর্তে এলাকায় শোকের ছায়া। ফোন পেয়ে ছুটে এসেছিলেন আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা। মৃতদেহ হস্তান্তরের আগে হাসপাতাল থেকে দেওয়া হলো মৃত্যুসনদও।
ফুল-মালা আর শববাহী গাড়ি নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে গেলেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা। কিন্তু হঠাৎ হাসপাতালের করিডোরে তাকিয়ে সবার চোখ কপালে। সেখানে দিব্যি হেঁটে বেড়াচ্ছেন ওই ষাটোর্ধ্ব জয়নারায়ণ।
মুহূর্তে সবার মাঝে খুশির রেশ ছড়িয়ে পড়লেও পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এহেন ভুলে সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অভিযোগ ওঠে, এ সময় ইস্যু হওয়া মৃত্যুসনদ ছিঁড়ে ফেলে দেন হাসপাতাল কর্মীরা।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জিনিউজকে জানায়, হাঁপানি এবং যক্ষ্মা রোগ নিয়ে জয়নারায়ণ গত ১৬ মে হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালের ৭২ নম্বর বিছানা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সুস্থ হলে গত মঙ্গলবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু জয়নারায়ণ পান্ডে হাসপাতাল ছেড়ে বাড়ি যাননি। হাসপাতালের বারান্দায় থাকা আরেক সংকটাপন্ন রোগীকে তিনি তাঁর বিছানা ছেড়ে দেন। তবে এ কথা জানত না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার ভোরবেলা বারান্দার ওই রোগী ৭২ নম্বর বেডে মারা যান। আর ওই ৭২ নম্বরে যেহেতু জয়নারায়ণ ছিলেন, তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর বাড়িতে মৃত্যুসংবাদ পাঠিয়ে দেয়।
এদিকে ‘মৃত’ জয়নারায়ণের জন্য যে ফুল এনেছিল স্বজনরা, তা পরিয়েই তাঁরা জীবিত জয়নারায়ণকে বাড়িতে নিয়ে গেছেন। আর এ ঘটনায় তাঁরা থানায় কোনো অভিযোগ করবেন না বলেও জানিয়েছেন।