আসাদুজ্জামান : কুরবানীর ঈদের আগে রাজধানী ঢাকায় গরুটির দাম হয়েছিল ৮ লাখ টাকা। তবে ১২ লাখ টাকায় বিক্রি করার জন্য গরুটি ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। সঠিক দাম না মেলায় গরুটি সে সময় বিক্রি করতে পারেননি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কৃষক আব্দুল গফফার। অবশেষে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে গরুটি।
আব্দুল গফফার কলারোয়া উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নের গৌরঙ্গপুর গ্রামের মৃত. সাহের গাইনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন কৃষক।
কৃষক আব্দুল গাফফার জানান, ঢাকার হাটে গরুটির দাম উঠেছিল ৮ লাখ টাকা। তবে আমার দাবি ছিল গরুটি বিক্রি করবো ১২ লাখ টাকায়। দামে বনিবনা না হওয়ায় গরুটি বিক্রি করিনি। বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছিলাম। গরুটি হঠাৎ অসুস্থ হলে ইউনিয়নের পশু চিকিৎসক ইব্রাহিম হোসেনকে ডাকি। তিনি পরামর্শ দেন উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের চিকিৎসক মাজবুর রহমানকে দেখানোর পরামর্শ দেন। গরুর গায়ে ৫-৭ টি ইনজেকশন পুশ করেন মাজবুর ও কিছু পাউডার দেন। পরে গরুটি মারাতœক অসুস্থ হয়ে পড়লে পরে অনেকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেনি। অবশেষে ৬ আগষ্ট (শুক্রবার) গরুটি মারা গেছে। আমি গরীব মানুষ বড় ক্ষতি হয়ে গেছে আমার। থানায় অভিযোগ দিয়েছি। আমি বিচার চাই, ক্ষতিপূরণ চাই।
অভিযোগের বিষয়ে কেরালকাতা ইউনিয়ন কৃত্রিম প্রজনন টেকনেশিয়ান ইব্রাহিম হোসেন বলেন, আমি ওই গরু চিকিৎসা করিনি। তারা আমাকে চিকিৎসার জন্য বলেছিলো। আমি উপজেলা অফিসের পশু চিকিৎসক মাজবুর রহমানের কাছ থেকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।
এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের উপ-সহকারি প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মাজবুর রহমান গরুটিকে চিকিৎসা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।
তবে সাতক্ষীরা জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার (১০ আগষ্ট) বিষয়টি তদন্তের জন্য আমি ঘটনাস্থলে রয়েছি। যেটি জানতে পেরেছি, এই কৃষক খুবই অজ্ঞ মানুষ। তিনি কিছুই বোঝেন না। গরুটি অসুস্থ হওয়ার পর প্রথমে ইউনিয়ন টেকনেশিয়ান ইব্রাহিম হোসেনকে জানায়। তারপর উপজেলা উপ-সহকারি প্রকৌশলী মাজবুর রহমান একদিন চিকিৎসা দিয়েছে। এরপর গরুটি সুস্থ হয়ে যায়। তারপর গরুটি আবার অসুস্থ হয়ে গেলে বার বার ইব্রাহিমকে জানিয়েছে তবে ইব্রাহিম উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসে যোগাযোগ করেনি। এরপর গরুটি মারা গেছে।
কলারোয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর খায়রুল কবীর জানান, কৃষক আব্দুল গফফার খুব অসহায় মানুষ। ভুল চিকিৎসায় দামী গরুটি মারা যাওয়ায় তিনি মারাতœকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। থানাতে একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি। কৃষক আব্দুল গফফার তার ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন।##