নিজস্ব প্রতিনিধি : অনৈতিক সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় শ্বাশুড়িকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার প্রচারের অভিযোগ উঠেছে পুত্রবধু নীলুফার বিরুদ্ধে। রোববার দুপুরে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের পাইকাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ ওই বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করেছে। এ সময় জনতা আটককৃত পুত্রবধু নীলুফাকে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
নিহতের নাম আছিয়া খাতুন (৬৫)। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের পাইকাড়া গ্রামের মৃত মোকছেদ আলী কারিকরের স্ত্রী।
পাইকাড়া গ্রামের আফজাল হোসেন জানান, তার ভাই আজগার আলী কয়েক বছর যাবৎ বাহারাইনে থাকে। আঁখি নামে তাদের চার বছরের এক মেয়ে আছে। বর্তমানে তার ভাইয়ের স্ত্রী নীলুফা (৩৫)স্থানীয় বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এক বছর আগে তারালী ইউপি সদস্য সামছুজ্জামানের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ায় জনতা তাকে আটকে রাখে। একপর্যায়ে প্রভাব খাটিয়ে সামছুজ্জামান সেখান থেকে চলে যায়। এরপরও সম্প্রতি একই পাড়ার আবু তালেব সরদারের ছেলে আব্দুস সেলিমের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলায় তার মা আছিয়া প্রতিবাদ করে। এ ঘটনায় গত বৃহষ্পতিবার নীলুফা মাকে পিটিয়ে জখম করে। একইভাবে শনিবার দুপুরে আব্দুস সেলিম নীলুফার ঘরে এলে প্রতিবাদ করায় মাকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করা হয়। তার যৌনাঙ্গে লোহার রড ঢুকিয়ে দেয় সেলিম ও নীলুফা। কেটে দেওয়া হয় ডান পায়ের একটি আঙুলের অংশ বিশেষ। নীলুফার অপকর্মে সহায়তা করতো তার বাবা মোহাম্মদ আলী। একপর্যায়ে রাতে মা মারা গেলে তাকে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার প্রচার দেয় নীলুফা। সকালে মাকে ঘর থেকে বের হতে না দেখে স্থানীয়রা বাইরে থেকে লাগানো দরজার শিকল খুলে আড়ার সঙ্গে গলায় দড়িবাঁধা অবস্থায় মায়ের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। এ সময় নীলুফা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে ধরে ফেলার চেষ্টা করলে সে ঘরের মধ্যে যেয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা বেড়া ভেঙে নীলুফাকে আটক করে। দুপুর একটার দিকে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ও নীলুফাকে আটক করে।
আফজাল হোসেন আরো জানান, তার মায়ের যৌনাঙ্গ দিয়ে বের হওয়া রক্ত পা বেয়ে নীচের দিকে পড়ছিল। এ সময় মায়ের ডান পায়ের বুড়ো আঙুলটি ধারালো জিনিস দিয়ে কাটা অবস্থায় দেখা যায়। এ ঘটনায় তিনি নীলুফা, তার বাবা মোহাম্মদ আলী ও আব্দুস সেলিমের নামে রাতেই মামলা করেবন।
নলতা ইউপি’র ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য শহীদুল ইসলাম খোকন বলেন, পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় শনিবার দুপুরে আছিয়াকে মারপিট করার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে শালিস বসে। শালিসে নীলুফা ক্ষমা চায়। এরপরও বেপরোয়া নীলুফা আবারো অনৈতিক সম্পর্কের কারণে শ্বাশুড়িকে পিটিয়ে ও যৌনাঙ্গে ভারী জিনিস ঢুকিয়ে পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করেছে।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মোস্তফা জানান, মৃত আছিয়ার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে। রোববার বিকেলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে আছিয়ার লাশের ময়না তদন্ত শেষে তার স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে মৃতের ছেলে আফজাল হোসেন রোববার সন্ধ্যায় বাদি হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ ঘটনায় নীলুফাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।#