জেলা ছাত্র মৈত্রীর উদ্যোগে শহীদ জুবায়ের চৌধুরী রিমুর ২৮ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালিত হয়েছে। আজ ১৯ সেপ্টেম্বর( রবিবার) সকালে শহীদ রিমু চত্তরে রিমু স্মরণে স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পার্ঘ প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পলিটব্যুরো সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সাতক্ষীরা জেলার সভাপতি মহিবুল্লাহ মোড়ল, সাধারণ সম্পাদক এড. ফাইমুল হক কিসলু,, বাংলাদেশ যুব মৈত্রী সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মফিজুল হক জাহাঙ্গীর, জেলা যুব মৈত্রী সদস্য মেঃ হাসান, ফিরোজ বিশ্বাস, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি সাকিব মোড়ল, সাধারণ সম্পাদক অর্পণ সাম্য প্রমুখ।
১৯ সেপ্টেম্বর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের এক কালো দিবস। ১৯৯৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর শিবিরের সন্ত্রাসীদের পরিকল্পিত হামলায় নিহত হন বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী নেতা শহীদ জুবায়ের চৌধুরী রিমি। ১৯ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে এগারোটার সময়। বিটিভির রাত দশটার খবর শেষ সবাই যখন টিভি রুমে সেই সময়ের জনপ্রিয় একটি ধারাবাহিক নাটক দেখছে, সেই সময় বহিরাগত সশস্ত্র ক্যাডারদের নিয়ে শেরে বাংলা হলে পরিকল্পিত হামলা চালায় শিবির। সবাই টিভি রুমে থাকায় কিছু বোঝার আগেই সশস্ত্র শিবির কর্মীদের হামলার শিকার হন হলের ছাত্ররা। শিবির সন্ত্রাসীরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন রুমে রুমে তল্লাসী চালায় এবং বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর নেতা কর্মীদের খুঁজে খুঁজে নৃশংসভাবে হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। এই পৈশাচিকতার এক পর্যায়ে শিবির সন্ত্রাসীরা ছাত্রমৈত্রী নেতা বিশ্ববিদ্যালয় টিমের মেধাবী ক্রিকেটার এবং ক্যাম্পাসের জনপ্রিয় মুখ জুবায়ের চৌধুরী রীমুকে সামনে পেয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। কেটে দেয়া হয় রীমুর হাত-পায়ের রগ। এতেই সন্তুষ্ট হয়নি ঘাতকেরা। মেঝেতে পড়ে থাকা রিমুকে কুপিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। রীমুর মৃত্যু নিশ্চিত করে তবেই ক্ষান্ত দেয় নরঘাতকেরা। ঝড়ে যায় একটি সম্ভাবনাময় প্রাণ।
উল্লেখ্য, শহীদ রিমুর মা মিসেস জেলেনা চৌধুরী সেই সময় ছিলেন সংরক্ষিত আসনের মহিলা সাংসদ এবং জাতীয়তাবাদী দলের নেত্রী। আজকের এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি শহীদ রিমুকে। বন্ধু তুমি নিশ্চয়ই দেখতে পারছো যে স্বপ্ন শহীদ জননী আমাদের দেখিয়েছিলেন, যে স্বপ্ন বাস্তাবায়নের পথে উৎসর্গ করেছো নিজেকে, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসীর রায় কার্যকর হয়েছে এই দেশে। এখনো সক্রিয় রয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল। নিশ্চয়ই একে একে সব যুদ্ধাপরাধী ও মানবতা বিরোধীদের বিচারের রায় বাস্তাবায়িত হবে এই বাংলার মাটিতে। তোমার আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না বন্ধু। এই বাংলাদেশ থেকে একাত্তরের ঘাতক দালালদের শেষ চিহ্নটুকু নিশ্চিহ্ন করার প্রত্যয়ে হাজারো রীমু এখনও প্রতিনিয়ত ঐ ঘাতক দালালদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঝাণ্ডা উড্ডীন রেখেছে। বিজয় তাদের হবেই। শহীদ রীমুর স্মৃতি চিরজীবী হোক। মৃত্যুঞ্জয়ী বীর শহীদ রিমু লাল সালাম।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি