আসাদুজ্জামান : প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ‘গেজেটেড অফিসার ও নন গেজেটেড কর্মচারীদের নিয়োগ বিধিমালা-২০২১ (প্রস্তাবিত)’ এর যৌক্তিক সংশোধনসহ পিটিআই’তে প্রকল্পে নিয়োগপ্রাপ্ত ইউআরসি ইন্সট্রাক্টরদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করে পিটিআই ইন্সট্রাক্টরদের সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট পদে শতভাগ পদোন্নতির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে।
এছাড়া স্মারকলিপিতে একাডেমিক অচলাবস্থা নিরসনের জন্য সকল শূন্যপদে ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ প্রদান ও ড.কুদরত-ই-খুদা কমিশনের সুপারিশের আলোকে পিটিআই’কে কলেজের মর্যাদা প্রদানসহ যথাযোগ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার দাবি পেশ করা হয়।
বুধবার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ পিটিআই ইন্সট্রাক্টর পরিষদ সাতক্ষীরা ইউনিটের নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীরের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি পেশ করেন ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও তার আওতাধীন মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মচারীদের জন্য দুইটি নিয়োগ বিধিমালা প্রচলিত আছে। একটি হলো: ক) বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৮১ (সংশোধিত ১৯৮৯) যা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারভুক্ত কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য। অপরটি হলো:- খ) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেটেড অফিসার ও নন গেজেটেড কর্মচারীদের নিয়োগ বিধিমালা-১৯৮৫, যা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নন ক্যাডার কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৮১ (সংশোধিত ১৯৮৯) বাতিল না করেই ক্যাডার ও ননক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা একত্রিত করে ক্যাডার পদকে নন ক্যাডার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৮১ (সংশোধিত ১৯৮৯) এর বিভিন্ন জায়গায় পরিবর্তন করা হয়েছে যা আইনের সাথে সাংঘর্ষিক এবং এতে বিদ্যমান অনেক সুযোগ সুবিধা পেতে জটিলতা সৃষ্টি করবে। স্মারকলিপিতে আরো বলা হয় যে, প্রস্তাবিত নিয়োগ বিধিমালা ২০২১ এ প্রশাসনিক উইং (শিক্ষা অফিস) এ ১৭৩ টি এডিপিইও পদ সৃজনের প্রস্তাব করা হয়েছে যেখানে থানা শিক্ষা অফিসার (ফিডার পদ ৫০৪) হতে এডিপিইও পদে ১০০% পদোন্নতির প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ পিটি আই ইন্সট্রাক্টরদের ক্ষেত্রে ১৩৪ টি পদের বিপরীতে ৮০% সরাসরি পদোন্নতির বিধান রাখা হয়েছে এবং বাকি ২০% পদে পিটিআই বহির্ভুত ইউআরসি ইন্সট্রাক্টরদের অনুপ্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নতুন নিয়োগবিধিমালা প্রণয়ন করে ইউআরসি ইন্সট্রাক্টরদেরকে অন্তর্ভুক্ত করে উক্ত পদে পদোন্নতি প্রদানের অভিপ্রায় থেকে এমনটি করা হচ্ছে বলে পিটিআই ইন্সট্রাক্টরগণ মনে করছেন এবং তাঁরা হতাশায় ভুগছেন। যা চরম বৈষম্যমূলক। প্রস্তাবিত এ নিয়োগ বিধিমালা কার্যকর হলে পিটিআইতে ১৯৯৫ সালে পিটিআই ইন্সট্রাক্টর হিসেবে রাজস্ব খাতে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণকে ২০১২ সালে রাজস্ব খাতে নিয়মিতকরণকৃত ১৭ বছরের জুনিয়র ইউআরসি ইন্সট্রাক্টরদের অধীনে চাকুরী করতে হবে; যা অত্যান্ত দুঃখজনক ও অনাকাংিখত বলে তারা মনে করেন।
তাছাড়া ২০০৬-২০০৭ সালে পিএসসি’র সুপারিশে নিয়োগকৃত পিটিআই ইন্সট্রাক্টরগণও বঞ্চনার শিকার হবেন যা ‘নন ক্যাডার কর্মকর্তা ও কর্মচারী (জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতি) বিধিমালা-২০১১’ এর অনুচ্ছেদ ৪(২) এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ফলে পিটিআই পরিবারে ইন্সট্রাক্টরবৃন্দের ২৭-২৮ বছরেও পদোন্নতি হবে না। এর ফলে তাঁদের মধ্যে হতাশার কারণে বিশৃঙ্খল কর্ম পরিবেশ তৈরী হতে পারে যা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করবে। স্মারকলিপি পেশকালে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পিটিআই ইন্সট্রাক্টর পরিষদ সাতক্ষীরা ইউনিটের নেতা শুভেন্দু কুমার দাশ, মো: মাহবুব মোস্তফাসহ সদস্যবৃন্দ।##