কে এম রেজাউল করিম দেবহাটা ব্যুরো :
দেবহাটার সাপমারা খালের উপর নির্মিত পারুলিয়া ফুটবল মাঠ সংলগ্ন সংযোগ সেতুটি ভাঙনের মুখে পড়ে কয়েক মাস আগে। অপরিকল্পিত ভাবে সাপমারা খাল পুনখননে বিভিন্ন পয়েন্টের সংযোগ সেতুগুলো ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। যার মধ্যে অন্যতম পারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন খেজুরবাড়িয়া সংযোগ সেতু।
গত বর্ষার মৌসুমে প্রবল বর্ষণে সেতুর পাশের মাটি সরে যাওয়ায় আরও বেশি হুমকির মুখে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিষয়টি কতৃর্পক্ষের নজরে আসায় উপজেলা পরিষদ থেকে প্রকল্প নিয়ে ভাঙন রোধে পাইলিংয়ের কাজ হাতে নেওয়া হয়। এ কাজের জন্য ১ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। পরে উপজেলা পরিষদের এই অর্থ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। কিন্তু সে সময়ের বরাদ্ধ দিয়ে শুধু মাত্র পাইলিংয়ের কাজ শেষ করা হয়। কিন্তু মাটি ভরাট না দেওয়ায় পরবর্তীতে সেতুর উভয় রাস্তায় ধ্বংস নামতে থাকে। যা বর্তমানে সেতুটি মরন ফাঁদের রূপ নিয়েছে।
অপরদিকে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছলিমা আক্তারের নির্দেশনায় উপজেলা এলজিইডি’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে উপজেলা ঠিকাদার সংগঠনের সভাপতি শেখ মারুফ হোসেনের মাধ্যমে পারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম পাশে সাপমারা খালের উপর সেতু কাজ শুরু হয়। পরে গত ২৫ আগষ্ট এ কাজ পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছলিমা আক্তার সহ সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, ১৯৯৭ সালে ১৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা ব্যায়ে নির্মিত হয় সেতুটি। এরপর থেকে দীর্ঘ কয়েক যুগের পর বর্তমানে সেতুটি ব্যবহারের অনুপযোগী হতে চলেছে। এমনকি পায়ে হেটে চলাও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে গিয়ে প্রতিদিন কেউ না কেউ পড়ে আহত হচ্ছেন। এই জনবহুল সেতু দিয়ে স্থানীয়রা বাজার, ব্যাংক, জরুরী কাজ সহ কর্মস্থলে যান। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পারাপার হতে হয়। সেতুটি ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় অনেকে দীর্ঘপথ ঘুরে যাচ্ছেন গোন্তব্যে। এতে তাদের ভোগান্তি বেড়ে চলেছে।
সাধারণ মানুষ বলছে, সেতুটি গত বছর থেকে ভাঙনের কবলে। খাল খননের প্রভাবে সেতুর দুপাশে মাটি সরে গিয়ে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী আরো জানান, সাপমারা মৃত খালটি গত অর্থবছরে সরকারের খাল খনন কর্মসূচির আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে খনন করে পুনর্জীবিত করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে খুব বেশি লাভবান হয়নি স্থানীয়রা। উল্টো সংযোগ সেতুগুলো ভেঙে পড়েছে। এতে আমাদের ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
উপজেলা ঠিকাদার সংগঠনের সভাপতি শেখ মারুফ হোসেন জানান, বরাদ্ধ অনুযায়ী সাপমারা খালের উপর পারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন সংযোগ সেতুটির পাইলিংয়ের কাজটি বাস্তবায়ন শেষে আমি ব্যক্তিগত ভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী অফিসার কে জিও ব্যাগ দিয়ে মাটি ভরাটের অনুরোধ জানাই। কেননা জিও ব্যাগ দিয়ে মাটি ভরাট না দেওয়া হলে সেতু ভাঙন রক্ষা সম্ভব না। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার দীর্ঘ সময় পার হয়ে যাওয়ার ফলে সেতুর দুপাশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে শুনেছি।
পারুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে জানানো হলেও কোন সমাধান পাওয়া যায়নি। এমনকি উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বিষয়টি তুলে ধরা হলেও সমাধান হয়নি। আমরা চাই সেতুটি দ্রুত চলাচলের উপযোগী করা হোক।
এ বিষয়ে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, খেঁজুরবাড়িয়া সেতুটি দিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করতে আজকেই উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী দুএকদিনের মধ্যে কাজ শুরুর আশ্বাস দেন তিনি।