নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষনের ঘটনায় আটক রাকেশ বাইন ও তার সহযোগী রাহুল চৌদিকারের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনির কলবাড়ী বাজারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন শ্যামনগর আতরজান মহিলা কলেজের প্রভাষক ও উন্নয়ন কর্মী দিপংকর বিশ^াস।
বুড়িগোয়ালিনি ইউনিয়নে সচেতন জনতার আয়োজনে জাগো যুব ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ ফারুক হোসেনের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, দৈনিক প্রথম আলোর স্টাফ রিপোর্টার কল্যাণ ব্যানার্জি, দৈনিক দক্ষিণের মশাল সম্পাদক ও সমাজকর্মী অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী, বাংলাদেশ জাসদ সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, উন্নয়নকর্মী চন্দ্রিকা ব্যানার্জী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ধর্ষনের কোন আপোষ হয় না। ধর্ষক এবং তার পরিবারকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। যারা ধর্ষনের পক্ষ নিচ্ছেন, তারাও ধর্ষনের মত অপরাধ করছেন। সকলের বাড়িতেই মা বোন রয়েছে। আজ একজন ধর্ষককে বাঁচানো চেষ্টা করছেন। যদি ও ধর্ষিতা আপনার মেয়ে বা আতœীয় হত তখন কি করতেন। যারা ধর্ষকের পক্ষ নিচ্ছে তাদের কেউ বিচারের আওতায় আনতে হবে।
ধর্ষনের মত জঘন্য অপরাধ সমাজ থেকে দুর করতে হলে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগের পাশাপাশি ধর্ষক এবং তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে হবে। সামাজিক কর্মকান্ডে তাদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করতে হবে। ধর্ষকদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে সকলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।
গত ১২ এপ্রিল চাচাতো বোন এর সাথে কলবাড়ী নেকজানীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির ছাত্রী বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে পূজা দেখতে যায়। সেখান থেকে ১০ টার দিকে বাড়িতে ফেরার পথে পূর্ব পরিচিত এক যুবকের সাথে তাদের দেখা হয়। রাস্তার উপর দাড়িয়ে ওই যুবকের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে স্থানীয় দুই বখাটে রাহুল চৌকিদার ও রাকেশ বাইন সেখানে হাজির হয়ে গালিগালাজ করে ঐ যুবককে তাড়িয়ে দেয়। এ সময় বখাটে রাকেশ ও রাহুল মিলে তাদের টেনে হিচড়ে পার্শ্ববর্তী রাকেশের বাড়িতে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে চাচাতো বোন রাহুলের হাতে কামড় দিয়ে পালিয়ে গেলেও নিকটস্থ বাগানে নিয়ে রাকেশ ভুক্তভোগী কিশোরীকে ধর্ষণ করে। এঘটনায় ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে শ্যামনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ২১। পুলিশ মামলার ১ আসামীকে আটক করলেও ২নং আসামী রাহুল চৌদিকার পলাতক রয়েছে।
এদিকে বিষয়টি মিমাংসার জন্য নেকজানীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিবাশীষ, সহকারী শিক্ষক নিরঞ্জন এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ আপোষের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এবিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে কলবাড়ী নেকজানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের দেখা পাওয়া যায়নি। তার ব্যহৃত নাম্বার দুটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি খগেন্দ্র নাথ মন্ডল বলেন, সভা আহ্বান করে ওই ধর্ষকের যাতে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ জানান, এজাহার নামীয় ১ নং আসামীকে আটক করা হয়েছে। ২নং আসামী পলাতক রয়েছে। মেয়েটি যাতে ন্যায় বিচার পায় সে বিষয়ে পুলিশ কাজ করবে।