নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় একের পর এক স্বর্ণ উদ্ধার হলেও মূল হোতারা রয়েছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে বার বার পালিয়ে যাচ্ছেন মূল হোতারা। যদিও দু একজন পাচিংম্যান আটক হয়েছেন। মূল হোতাদের আটক করতে না পারলেও স্বর্ণ পাচার কোন ভাবেই বন্ধ করা সম্ভব হবে না।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট বৈকারী সীমান্ত এলাকা থেকে ৫পিচ স্বর্ণের বারসহ মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক পাচারকারীকে আটক করে বিজিবি। গত ২৬ জুলাই ৪পিচ স্বর্ণের বারসহ আসলাম হোসেন নামের এক পাচারকারীকে আটক করে কলারোয়া থানা পুলিশ। গত ৮ জুন একই সীমান্ত এলাকা থেকে ২পিচ স্বর্ণের বারসহ আটক হয় সাগর হোসেন নামের এক পাচারকারী। গত ১৮ মে সদর উপজেলার আলীপুর এলাকা থেকে ৭পিচ স্বর্ণের বার এবং ১ মার্চ কলারোয়া সীমান্তের সোনাবাড়িয়া এলাকা থেকে ৮পিচ স্বর্ণের বার উদ্ধার করলেও কাউকে আটক করতে পারেনি বিজিবি। গত ৬ ফেব্রুয়ারি ১৮টি স্বর্ণের বার ভারতে পাচারকালে মিঠু নামের এক পাচারকারীকে আটক করে সদর থানা পুলিশ। এছাড়া ১২ ফেব্রুয়ারি ১৮ পিচ স্বর্ণের বারসহ পাচু সরদার নামের একজন পাচারকারীকে বৈকারী সীমান্ত থেকে আটক করে বিজিবি।
তবে স্বর্ণসহ আটক হওয়া সকলেই পাচারকারী বলে জানা গেছে। এসব স্বর্ণের মালিক বা মূল হোতারা নানা অযুহাতে পার পেয়ে যাচ্ছেন। যদিও সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান যোগদানের পর সাতক্ষীরার শীর্ষ চোরাকারবারি শেখ শফিউল্লাহ মনি ওরফে গোল্ড মনিকে আটকের জন্য পুরস্কার ঘোষনা করে। এরপর মনি বিভিন্নভাবে পুলিশ সুপারকে হেনস্তা করার চক্রান্তও করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তিরা বলছেন, বর্তমানে সাতক্ষীরার সীমান্ত দিয়ে স্বর্ণ পাচারের সাথে জড়িত ঢাকার সাভার এলাকার কোন্ডা দাসপাড়া গ্রামের দুখিরাম দাসের ছেলে আকাশ দাস। তার প্রতিনিধি হিসেবে সাতক্ষীরা কাজ করছেন জয়দেব সিংহ এবং বৈকারী এলাকা নিয়ন্ত্রন করছেন জনৈক বাবর আলী ও সাবেক এক ইউপি চেয়াম্যান।
এছাড়া স্বর্ণ ব্যবসায়ী হিসেবে কাজ করছেন শহরের কাটিয়ার টুটুল, মধ্য কাটিয়ার হারুণ, কামালনগরের ইব্রাহিম, পুরাতন সাতক্ষীরার বলাই দে, মাগুরা বৌ বাজার এলাকার শফিকুল ইসলাম শফি, ঘোনা ইউনিয়নের সোনা ফারুক, সদর উপজেলার লাবসা ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামের মঈন, রজনগরের দিদারুল, বৈকারী ইউনিয়নের আতা, হাসান, স্বপন। দেবহাটার রবি, আলিম মেম্বার, লাবসা ইউনিয়নের নলকুড়া গ্রামের আবুল খায়ের। কলারোয়া উপজেলার ইয়ার আলী মেম্বার ও ওই ইউনিয়নের সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যান।
প্রচার আছে আকাশ দাস ঢাকায় অবস্থান করেই সাতক্ষীরায় স্বর্ণের রমরমা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। তবে কোন ভাবেই স্বর্ণ পাচার আটকানো সম্ভব হচ্ছেনা বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে শনিবার বিকাল ৬টা ০৮মিনিটে আকাশ দাসের মুঠো ফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান (পিপিএম বার) এর সাথে যোগযোগাগের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।
বিজিবি’র অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আশরাফুল ইসলাম এর মুঠো ফোনে রিং করলে তিনি রিসিভ না করায় যোগযোগ করা সম্ভব হয়নি।