আসাদুজ্জামান ঃ জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে বকচরা আহমেদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার রমজান আলীসহ চার জন গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৮/১০ জনকে আসামী করে সদর থানায় একটি মামলার এজাহার জমা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে রমজান আলীর মেঝ ভাই আব্দুর রহমান বাদী হয়ে উক্ত মামলার এজাহারটি জমা দেন। মামলার এজাহারটি তদন্ত সাপেক্ষে সন্ধ্যায় রেকর্ড করা হবে এবং আসামীদের গ্রেপ্তারে জোর প্রচেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
মামলায় যাদের আসামী করা হয়েছে তারা হলেন, শহরের ইটাগাছা এলাকার মৃত গিয়াসের পুত্র মোঃ নাহিদ (২৬), বাঁকাল এলাকার আব্দুল গফফারের পুত্র মোঃ রিপন (২৬), একই এলাকার মোঃ সাবদুল এর পুত্র মোঃ সিরাজুল ইসলাম (২৭), মৃত আক্কাজ আলীর পুত্র আব্দুল গফফার (৫৫), মোঃ মিজানের পুত্র মোঃ জিল্লু (৩০), আব্দুল গফফারের স্ত্রী শাহানারা খাতুন (৫০) ও তাদের কন্যা খুকু মনি (২৪)।
আব্দুর রহমানের দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা যায়, জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ২৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ সোমবার সকাল ১১টার দিকে উক্ত আসামীরাসহ তাদের গুন্ডাবাহিনী হাতে রাম দা, লোহার রড, ছুরি, লোহার হাতুড়ি, জিআই পাইপ ও বাঁশের লাঠি সহকারে বেআইনী জনতা দলবদ্ধ হয়ে সাতক্ষীরা শহরের বাঁকালস্থ তাদের বাড়িতে অনধিকারভাবে প্রবেশ করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাচ করতে থাকে। এতে তার বড় ভাই রমজান আলী প্রতিবাদ করলে ৪নং আসামী আব্দুল গফফারের হুকুমে অন্যান্য আসামীরা তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করতে থাকে। এ সময় তার ডাক চিৎকারে বোন সাজিদা খাতুন, ভাগ্নে ফাহিম সরদার ও ভাইপো (রমজানের ছেলে) ফারহান ফেরদৌস তাকে রক্ষা করতে আসলে উক্ত আসামীরা তাদেরও মারপিট করতে থাকে। এক পর্যায়ে ১ নং আসামী নাহিদ হত্যার উদ্দেশ্যে তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে সজোরে রমজানের পেটের বাম পাশে পাজরের নিচে ছুরিকাঘাত করে।
এতে রমজান গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। এরপর ২নং আসামী রিপন হত্যার উদ্দেশ্যে জিআই পাইপ দিয়ে বোন সাজিদাকে মারতে গেলে তার বাম চোখে লেগে থ্যাতলানোসহ রক্তাক্ত জখম হয়। ৩নং আসামী সিরাজুল হত্যার করার উদ্দেশ্যে ভাইপো ফারহানকে রামদা দিয়ে তার পিঠের বাম পাশে কোপ মারে। এতে সে গুরুতর জখম হয়। ৪নং আসামী আব্দুল গফফার হত্যার উদ্দেশ্যে ভাগ্নে ফাহিমকে ধারালো দা দিয়ে মাথায় কোপ মারতে গেলে সে মাথা সরিয়ে নিয়ে হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে তার ডান হাতের কনুইয়ের নিচে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। ৫নং আসামী জিল্লু তার (আব্দুর রহমানের) বোনের পরনের জামাকাপড় টেনে হেচড়ে শ্লীলতাহানি ঘটায়। ৬নং আসামী শাহানারা তার বোনের গলায় থাকা ১২ আনা ওজনের ১টি সোনার চেইন যার মূল্য ৭০ হাজার টাকা টান মেরে কেড়ে নেয়। এছাড়া ৭নং আসামী খুকুমনিসহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা বাঁশের লাঠি, লোহার রড ও জিআই পাইপ দিয়ে ভাই রমজান, বোন সাজিদা, ভাইপো ফারহান ও ভাগ্নে ফাহিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। আহতরা সবাই বর্তমানে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহতদের মধ্যে রমজান আলীর অবস্থা আশংকাজনক।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম জানান, আহত রমজান আলীর মেঝ ভাই আব্দুর রহমানের দেয়া মামলার এজাহারটি তদন্ত সাপেক্ষে সন্ধ্যায় রেকর্ড করা হবে। তিনি আরো জানান, আসামেিদর গ্রেপ্তারের পুলিশের জোর প্রচেষ্টা চলছে।##