কলারোয়া প্রতিনিধি::
রক্ত মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করে। জীবন বাঁচানোর অজুহাতে গড়ে উঠেছে অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবী ব্লাড ব্যাংক সংগঠন। সেই রক্ত নিয়েই শুরু বানিজ্য।
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় এমন একটি সামাজিক সংগঠন কলারোয়া স্বেচ্ছাসেবী ব্লাড ফাউন্ডেশন। এই সংগঠনের সভাপতি কলারোয়া উপজেলার ৩ নং কয়লা ইউনিয়নের আলাইপুর গ্রামের মৃত তবিবরের পুত্র ইউসুফ (৩০)।
সম্প্রতি স্যোশাল মিডিয়াতে মিল্টন সমাদ্দারের নাম সামনে আসায় কলারোয়ায় ইউসুফের নাম ও মোটা দাগে আলোচনায় আসে।
কলারোয়া স্বেচ্ছাসেবী ব্লাড ফাউন্ডেশন সংগঠনের পরিচালনার সুবাদে কলারোয়া উপজেলা ও পাশ্ববর্তী এলাকার মানুষ এই ইউসুফের সাথে যোগাযোগ করেন, মুমুর্ষ রোগীর রক্তের জন্য।
সেখানেই কপাল খুলে যায় ইউসুফের। মুমুর্ষ রোগীর অসহায়ত্ব কে পুঁজি করে লুফে নিয়েছেন লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা। অবৈধ ভাবে উপার্জনের টাকায় গড়েছেন বিলাসবহুল বাড়ি।
নিজের নামে কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তিনটি হাটবাজারে ডাক ও কব্জায় নিয়েছেন তিনি।
ভুক্তভোগী কেরালকাতা ইউনিয়নের নাকিলা গ্রামের জিয়াদ আলীর পুত্র মুকুল হোসেন জানান, তার মায়ের চিকিৎসার জন্য রক্তের প্রয়োজন হলে মুঠোফোনে ইউসুফের সাথে যোগাযোগ করে, পরবর্তীতে ইউসুফ কলারোয়ার মিতালী ডায়গনস্টিক সেন্টারে আসতে বলে এক ব্যাগ ব্লাড দিয়ে ১২০০ টাকা দেওয়ার কথা বলে। মুকুল তার অসহায়ত্বের কথা জানালেও ইউসুফ সুযোগে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে এবং বার,শ টাকা দিতে বাধ্য করে।
অপর ভুক্তভোগী হেলাতলা ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের পুত্র শহীদ হোসেন বলেন, তার স্ত্রী সিজারের অপারেশনের জন্য জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে ইউসুফের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে যোগাযোগ করলে ইউসুফ তাদেরকে কলারোয়ায় আসতে বলে। স্থানীয় ক্লিনিকে এক ব্যাগ সংগৃহীত রক্তের জন্য পনেরশো টাকা দাবি করে পরবর্তীতে এক হাজার টাকা দিতে বাধ্য করে।
এছাড়াও অভিযোগ আছে ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন বলে রক্তদানে আগ্রহী এমন ব্যক্তিদের কে সনাক্ত করে পরবর্তীতে রক্ত লাগবে বলে তাদের থেকে ব্লাড টেনে নিয়ে নিজের ইচ্ছে খুশি মতো ব্যবহার করে।
এই বিষয়ে প্রতারক ইউসুফের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতার স্বীকার করে বলেন যে হাজার টাকা না আমরা রোগীদের কাছ থেকে পাঁচশত টাকা গ্রহণ করে রোগীদের পিছনেই ব্যয় করি।
কলারোয়া ব্লাড ফাউন্ডেশন এর উপদেষ্টা মাস্টার শাহজাহান আলী শাহীন জানান ইতি পূর্বে এই ইউসুফের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অসহায় রোগীদের কাছ থেকে ব্লাড দিয়ে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া যায়। সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ইউসুফকে ডেকে নিয়ে রোগীদের থেকে অর্থ লুটপাট করতে নিষেধ করে দেয়। তারপরও ইউসুফের অর্থ লোক কোন ভাবেই কমছে না সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন।
কলারোয়া ব্লাড ফাউন্ডেশনের সভাপতি ফারহান আল ফারুক জানান ইউসুফের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। সাংগঠনিকভাবে স্থায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
কলারোয়া ব্লাড ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা কামাল রেজা জানান এই ধরনের অনিয়ম কোন ভাবেই কাম্য নয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে সাংগঠনিক ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।#