ইরাকি বাহিনী বলছে, ইসলামিক স্টেটের দখল থেকে মসুল শহরটি পুনরুদ্ধারের জন্য তাদের লড়াই এখন শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। কর্মকর্তারা বলছেন, আইএস যোদ্ধারা এখন মসুল শহরের পুরোনো এলাকার ‘দুই বর্গ কিলোমিটারের মতো জায়গায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে’। সেখান থেকেই মরণকামড় দেয়ার চেষ্টা করছে তারা।
গত চার দিনে ইরাকি বাহিনীর ওপর অন্তত ৮০টি আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে আইএস। অন্যদিকে সরকারি বাহিনী আইএসের শেষ অবস্থানগুলোর ওপর হেলিকপ্টার গানশিপ এবং মর্টার থেকে গোলাবর্ষণ করছে। আর আত্মঘাতী হামলা দিয়ে পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে আইএস।
গতরাতে দু’দফায় আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে তারা।
তবে সরকারি বাহিনী বলছে, মসুলের যুদ্ধে বিজয় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
ইসলামিক স্টেটের কাছ থেকে মসুল দখলের এ অভিযান চলছে প্রায় আট মাস ধরে। ইরাকি সৈন্য ছাড়াও সরকার-সমর্থক একাধিক মিলিশিয়া বাহিনী এই অভিযান চালাচ্ছে। আর আকাশ থেকে বিমান হামলা চালিয়ে সাহায্য করছে আমেরিকা।
জানুয়ারিতে শহরের পূর্বাংশ মুক্ত করার ঘোষণা দেয় ইরাকি সরকার। কিন্তু পশ্চিমাংশ অর্থাৎ সরু অলিগলিতে ঠাসা ঘনবসতিপূর্ণ পুরোনো শহর থেকে আইএসকে তাড়ানো ধারণার চেয়েও কঠিন হয়ে পড়ে।
তবে ইরাকি সেনাবাহিনী এখন জোর দিয়ে বলছে, বিজয় এখন সময়ের ব্যাপার। আইএসকে তারা এখন শহরের পুরোনো অংশের এক বর্গমাইল এলাকার মধ্যে আটকে ফেলেছে।
একজন সেনা কমান্ডার বলেছেন, আর ছয়শ’ মিটার এলাকা দখল করতে পারলেই তারা এই যুদ্ধে জয়ী হবেন।
তবে বিভিন্ন সুত্রে জানা যাচ্ছে, শেষ মুহূর্তে মরণ কামড় দেওয়ার চেষ্টা করছে আইএস যোদ্ধারা। তাদের অধিকাংশই বিভিন্ন দেশ থেকে আসা উগ্রবাদী।
ইরাকি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ অ্যালেক্স মেল্লো বিবিসিকে বলেন, বাকি আইএস যোদ্ধারা এখন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লড়বে। এরা সংখ্যায় ২০০ থেকে ৩০০র মত হবে।
“এরা কট্টর এবং প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এরা এখন পুরোনো শহরের মধ্যে ঘাঁটি গেড়ে আছে, এবং তারা পালাবে না, না-মরা পর্যন্ত লড়ে যাবে।”
মসুলের রণাঙ্গন থেকে বিবিসির ওরলা গেরিন বলছেন, মসুলে আইএসের দিন শেষ হয়ে আসছে, কিন্তু সেই সাথে শেষবার প্রতিরোধে তাদের চেষ্টা স্পষ্ট।
ইরাকি সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, গত চারদিনে তিনি ৮০টি আত্মঘাতী হামলার মুখোমুখি হয়েছেন। রোববার রাতেও বড় ধরণের দুটি আত্মঘাতী হামলা হয়েছে।
ইরাকি সৈন্যদের মধ্যেও বহু প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে।
স্যালি বেকার নামে একজন ত্রানকর্মী বিবিসিকে বলেছেন, রোববার রণাঙ্গণে তাদের ক্লিনিকে ২০ জন সৈন্যের মৃতদেহ ছিল। পুরো কেন্দ্রটিই আহত নিহত সৈন্য দিয়ে ভর্তি।
সেই সাথে পুরোনো শহরে আটকা পড়েছে হাজার হাজার বেসামরিক লোকজন। তাদের অবস্থা সঙ্গীন। সূত্র : বিবিসি