নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার আশাশুনির আনুলিয়া ইউনিয়নের খোলপেটুয়া নদীর বেঁড়িবাধ ভাঙন কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বানভাসী মানুষের মাঝে সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশীপ। গত ৩১ মার্চ (ঈদের দিন) আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট গ্রামে দেড়’শ ফুট জায়গা জুড়ে বেঁড়িবাধ ভেঙে খোলপেটুয়া নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পানিবন্দি হয়ে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। পানিতে ভেসে যায় হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি। বিধ্বস্ত হয় শতাধিক কাঁচাঘর বাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষের সাহায্যার্থে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী সংস্থার পাশাপাশি এগিয়ে আসেন ফ্রেন্ডপশীপ। লবন জলে আক্রান্ত এসব মানুষের সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করে সংস্থাটি।
স্থানীয় বাসিন্দা ফাতেমা খাতুন, শাপলা পারভিন, বিল্লাল হোসেন, শফিকুল ইসলামসহ একাধিক ক্ষতিগ্রস্তদেরসাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় দু’সপ্তাহ হয়ে গেলেও কষ্টের শেষ নেই তাদের। বরং দুর্ভোগ বাড়ছে দিনকে দিন। উপকূলীয় এলাকার অভিশাপ লবন জলের কবলে পড়েছেন আনুলিয়া ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। চারিদিকে শুধু পানি, তবে তা লবনাক্ত। গাছপালা, ফসল, সব পানির নিচে। হাসমুরগি, গবাদি পশু খাবারের অভাবে মরার পথে। তাই বেঁচে দিতে বাধ্য গৃহস্থরা। এভাবে অর্থনৈতিকভাবে দরিদ্র হয়ে পড়ছেন এই ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
ফ্রেন্ডশিপের সিনিয়র ডিরেক্টর কাজী এমদাদুল হক বলেন, আনুলিয়া ইউনিয়নের খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার ঘটনা অনেকটা আকষ্মিক এবং কল্পনাতীত। তাৎক্ষণিকভাবে লবনাক্ত আক্রান্ত বানভাসী মানুষের জন্য সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিতে গুরুত্ব দিচ্ছে ফ্রেন্ডশিপ। প্রতিদিন ৬টি প্লান্টের মাধ্যমে বিশুদ্ধ সুপেয় পানি সরবরাহসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের সুস্বাস্থ্য চিন্তা করে ফ্রেন্ডশিপ সরবরাহ করছে ভাসমান টয়লেট। এছাড়া খোল পেটুয়া নদী তীরবর্তী এলাকায় শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর, নীলডুমুর-সহ নদী তীরবর্তী এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা এবং বেড়িবাঁধ রক্ষায় ম্যানগ্রোভ বনায়ন করে যাচ্ছে ফ্রেন্ডশিপ।
আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস বলেন, প্রায় ৪ বছর ধরে ভঙ্গুর অবস্থায় থাকা ঈদের দিন বেড়িবাধটি হঠাৎ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় আনুলিয়া ইউনিয়নের ২টি মসজিদ, ৩টি মাদ্রাসা, ঈদগাহ, খেলার মাঠসহ বেশ কিছু বসতি। পানিবন্দি হয়ে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। পানিতে ভেসে যায় হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি। বিধ্বস্ত হয় শতাধিক কাঁচাঘর বাড়ি। জোয়ারের পানিতে লবনাক্ত হয়ে যায় স্বাদু পানির সব জলাধার আর ফসলি জমি।
তিনি আরো জানান, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দুর্যোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। স্থানীয়দের সুস্বাস্থ্য বিবেচনায় সুপেয় পানি সরবরাহ এবং ভাসমান ল্যাট্রিন সুবিধা দিচ্ছে বেসরকারী সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ। যা স্থানীয়দের স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেক কমিয়ে দিয়েছে। মানুষের এখন বেশি দরকার নিত্যদিনের চাহিদা পূরণ।