নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরায় ছাত্র-ছাত্রীর অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করে বিপাকে পড়েছেন বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুর রহমান। শিক্ষকের প্রতিবাদে নিজেরা সংশোধন না হয়ে উল্টো ওই শিক্ষককে ফাঁসাতে মিথ্যা অভিযোগ তুলে মানববন্ধনসহ অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক।
শনিবার (৩১ মে) সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ জেলার অন্যান্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, গত ২০ মে সকালে তিনি সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাসে যাওয়ার সময় বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির কাছে নবম শ্রেণির ভোকেশনাল বিভাগের নয়ন ছাত্র এবং বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীকে ‘অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলতে’ দেখেন। পরদিন শ্রেণিকক্ষে তিনি তাদের সতর্ক করেন।
শিক্ষক শফিকুর দাবি করেন, এই ঘটনার জেরে ওই ছাত্র ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এর জের ধরেই সে জোরপূর্বক ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থীকে সাথে নিয়ে অনিয়মের দায়ে বহিস্কৃত সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জামিলুজ্জামানের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের ভয়ভীতি ও বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মিথ্যা তথ্য দিতে উদ্বুদ্ধ করে। এছাড়াও এলাকার কয়েকজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে গত ২৬ মে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করে। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এ.কে.এম আজহারুজ্জামান তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত শেষ হওয়ার আগের পত্রপত্রিকায় মিথ্যাচার করা হচ্ছে যা তদন্তের নিরপেক্ষতা হারায়। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো শিক্ষক শফিকুর রহমান কে ০১৩৩১৯২০০৬৬ নম্বর থেকে থানার ওসির পরিচয়ে তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। একই নম্বর থেকে একাধিক ব্যক্তিকে কনফারেন্স কলে যুক্ত করে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়। যার অডিও রেকর্ড তার কাছে রয়েছে। এসব কথোপকথনে সাবেক প্রধান শিক্ষক জামিলুজ্জামান ও মুকুন্দপুর গ্রামের আব্দুল গনির নামও উঠে এসেছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্র নয়নের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, শিক্ষক শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমরা সহপাঠী হিসেবে একসাথে কথা বলতেই পারি। তবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন প্রকৃতপক্ষে নিজে বাঁচার জন্য শফিক স্যার এধরনের কথা বলছেন।
তবে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এ ক এম আজহারুজ্জামান বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য একটি কুচক্রী মহল এধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আমরা যতদূর জেনেছি ওই ছাত্র নয়ন এক ছাত্রীদের সাথে প্রায়ই আপত্তিকর অবস্থায় বসে থাকে। যেটি শিক্ষার্থীরাও অবগত আছেন। শফিক স্যার সেটি প্রতিবাদ করেছেন মাত্র। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্র অনিয়মের দায়ে বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক জামিলুজ্জামানের সাথে মিলিত হয়ে চক্রান্ত চালাচ্ছে। এতে আমরা খুবই বিব্রত এবং এঘটনায় শফিক স্যার কোনভাবেই জড়িত নন।