অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের ঝামেলা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। বোর্ডের লভ্যাংশের একটা অংশ আনুপাতিক হারে বিভিন্ন স্তরে ভাগ করে দেওয়া নিয়েও দুই পক্ষের মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি হয়। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দর্শক হয় না, এই যুক্তিতে সে পর্যায়ে খেলা ক্রিকেটারদের লভ্যাংশ দিতে চাইছে না সিএ। ক্রিকেটারদের আপত্তি সেখানেই, তারা চাইছে সব পর্যায়ের ক্রিকেটারদের মধ্যে বণ্টন করতে হবে বাড়তি আয়ের অংশ। তা নিয়ে দুক্ষের মধ্যে ঝামেলার শেষ দিন গতকাল শুক্রবারও সমঝোতা হয়নি। বোর্ডের শর্ত মেনে নতুন চুক্তিতে সই করেননি তাঁরা। তাই অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা কার্যত এখন বেকার।
ক্রিকেটারদের সংগঠন দ্য অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসিএ) এই সিদ্ধান্তে দেশটির শীর্ষ ক্রিকেটার থেকে শুরু করে প্রায় ২৩০ জন ক্রিকেটার এখন বেকার হয়ে গেছেন। তাই বড় একটা সংকটে পড়ে গেছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট। কারণ আগস্টে বাংলাদেশ সফরের আসার কথা স্মিথদের। দুই টেস্টের দলও ঘোষণা হয়ে গেছে আগেই। চলতি মৌসুমে আছে মৌসুমের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ অ্যাশেজ সিরিজ। বোর্ড এবং খেলোয়াড়দের দ্বন্দ্বে চরম অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে এই দুটি সিরিজও।
সংকটের শুরুটা হয়েছিল ঘরোয়া ক্রিকেটারদের নিয়েই। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে প্রায় দুই দশক ধরে একটা বেতন কাঠামো চালু আছে। সেই কাঠামো অনুযায়ী বোর্ডের লভ্যাংশের একটা অংশ আনুপাতিক হারে বিভিন্ন স্তরে ভাগ করে দেওয়া হতো। কিন্তু এবার একটা নতুন কাঠামো করার প্রস্তুব দিয়েছে সিএ। লভ্যাংশ শুধু কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ২০ জন খেলোয়াড়কে দেওয়া হবে।
কারণ ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে বোর্ডের তেমন আয় হচ্ছে না। তাই লভ্যাংশ তাদের দেওয়া হবে না। বোর্ড সেই অর্থ খরচ করতে চায় তৃণমূল ক্রিকেটে। ক্রিকেটাররা তাতে আপত্তির জানায়। কারণ ঘরোয়া ক্রিকেটারদের জন্য তা অপমানজনক।
ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। পরে আরেকটি প্রস্তাব দিয়েছিল বোর্ড। কিন্তু তাও মানেননি ক্রিকেটাররা। কারণ সেই প্রস্তাবেও ঘরোয়া ক্রিকেটাররা লভ্যাংশ পাবেন না।
তাই ক্রিকেটাররা হুমকি দিয়েছেন, সমঝোতা না হলে বিভিন্ন দেশের লিগে খেলবেন তাঁরা। অ্যাশেজেও খেলবেন না। বোর্ডও অনড় অবস্থানে। তারা পাল্টা হুমকি দেয়,অনুমতি না নিয়ে অন্য কোনো লিগে খেললে নিষিদ্ধ করা হবে খেলোয়াড়দের।
শুধু তাই নয়, বোর্ডের পক্ষ আরো জানানো হয়েছে, যদি পরে সমঝোতা হয়ও এই সময়টার (বেকার) বেতন দেওয়া হবে না খেলোয়াড়দের। সেই টাকা তারা খরচ করবে তৃণমূল পর্যায়ের ক্রিকেটের জন্য।