নিজস্ব প্রতিনিধি:সাতক্ষীরা শহরের ঐতিহ্যবাহী প্রাণসায়ের খাল রক্ষা ও জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে তরুণ সংগঠন সাতক্ষীরা ইয়ুথ অ্যালায়েন্স।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর ) সকালে ১০ শহরের সুলতানপুরস্থ আজাদী সংঘ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মুশফিকুর রহমান লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ব্রিটিশ আমলে স্থানীয় জমিদার প্রাণনাথ রায়চৌধুরী শহরের উন্নয়ন ও কৃষিকাজের সুবিধার্থে ১৮৬০ থেকে ১৮৬৫ সালের মধ্যে প্রাণসায়ের খালটি খনন করেন। এক সময় এটি মরিচ্চাপ ও বেতনা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে নৌযান চলাচল, সেচ ও বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
কিন্তু বর্তমানে খালটি দখল, আবর্জনা ফেলা, অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ ও অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারণে মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়েছে। খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে এবং লুইসগেটের কারণে সংযোগ খালগুলোও মৃতপ্রায় অবস্থায় রয়েছে। এর ফলে শহরে জলাবদ্ধতা, দুর্গন্ধ ও মশা-বাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে।
খালটি সাতক্ষীরার ঐতিহ্য ও পরিবেশের প্রতীক সংগঠনের সভাপতি বলেন,প্রাণসায়ের খাল শুধু একটি জলাধার নয়, এটি সাতক্ষীরার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও পরিবেশগত ভারসাম্যের প্রতীক। এই খালকে পুনরুদ্ধার করা মানে শহরের জীবনযাত্রা, অর্থনীতি ও পরিবেশ রক্ষায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করা।
সাতটি দাবি তুলে ধরে সংগঠন
সাতক্ষীরা ইয়ুথ অ্যালায়েন্স প্রাণসায়ের খাল রক্ষায় সাতটি দাবি তুলে ধরে, খালের দুই পাড়ে পরিচ্ছন্নতা অভিযান, বৃক্ষরোপণ ও সৌন্দর্যবর্ধন, যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সবুজ বেষ্টনী তৈরি,খাল সংলগ্ন ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার ও জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও নিয়মিত মনিটরিং, যুব ও নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণে তদারকি কমিটি গঠন, দূষণকারী কসাইখানা ও স্থাপনা স্থানান্তর,খালের সংযোগ পুনঃস্থাপন ও জনমত গঠন।
এ সময় সংগঠনটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শ্যামনগর, কালিগঞ্জ, আশাশুনি ও তালা উপজেলায় সুপেয় পানির সংকট মোকাবিলায় প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়। পানির বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ করে সকল মানুষের পানির অধিকার নিশ্চিত করারও দাবি জানানো হয়।
প্রাণসায়ের খাল রক্ষায় ২৩ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে নাগরিক কমিটি, সামাজিক সংগঠন, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে একটি ‘মুভমেন্ট কর্মসূচি’ পালন করা হবে। একই দিনে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্বারকলিপি প্রদান করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনের শেষে সংগঠনের সভাপতি মুশফিকুর রহমান বলেন,প্রাণ সায়ের খাল রক্ষার এই আন্দোলন শুধু পরিবেশ নয়, এটি আগামী প্রজন্মের টিকে থাকার সংগ্রাম। প্রশাসন, পৌরসভা, পরিবেশ অধিদপ্তর, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজ একসাথে কাজ করলে খালটি আবারও ফিরে পাবে তার হারানো নান্দনিকতা ও জীবনীশক্তি।
এ সময় সংগঠনের সহ-সভাপতি হোসেন আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কর্ণ বিশ্বাস কেডি, সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, সদস্য অর্পণ বসু