জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটে (আইএস) কিভাবে শিশুদের যুক্ত করা হয়, যুদ্ধ ও হত্যার প্রশিক্ষণ দেয়া হয় সে বিষয়ে সংগঠনটির প্রাক্তন এক শিশু জঙ্গি ন্যাটো সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে। নাম ও পরিচয় প্রকাশ না করা ১৫ বছর বয়সী এ প্রাক্তন আইএস সদস্য শনিবার লাটভিয়ায় নিরাপত্তা বিষয়ক ন্যাটোর এক সম্মেলনে নানা অভিজ্ঞতার কথা বলে।
এসময় শিশুটি জানায়, ‘একটি গোপন ঘাঁটিতে মাত্র এক মাসের সামরিক প্রশিক্ষণ নেয় সে। সেখানে সিনিয়র যোদ্ধারা তরুণদের বর্বরোচিত কাজে যুক্ত করার জন্য নানা ধরণের কৌশল নির্ধারণে নিযুক্ত ছিল। ‘ সে আরো জানায়,’অস্ত্র নিয়ে অনেক ধরণের প্রশিক্ষণ দেয়া হত এখানে। প্রকৃত অস্ত্র হাতে নিতে গিয়ে কেউ যদি দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায় তাহলে তারা তার হাত অস্ত্রের ব্যারেলে এমনভাবে চেপে ধরত আঙ্গুলগুলো ভেঙ্গে যেত। ‘
কিভাবে একটি শিশুকে হত্যাকান্ডের প্রশিক্ষণ দেয়া হত সে সম্পর্কে শিশুটি জানায়, ‘তারা একটি শিশুকে ট্রাকের মধ্যে তুলে নিয়েছিল এবং তাকে বলেছিল যে সে একজন কাফেরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে যাচ্ছে। তার হাতে একটি ছুরি দিয়ে তারা বন্দীর কাছে নিয়ে গেল। এভাবে হাত বাঁধা বন্দীকে শিরোচ্ছেদ করা হয়েছিল। এ সময় কয়েকজন উদ্বিগ্ন হয়ে হয়ে পড়লেও তারা নিরব থাকে তবে কাউকে যখন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, সবাই খুশি প্রকাশ করে এবং ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি দেয়। ‘
বন্দীদের ওপর আইএসের নির্যাতনের নানা ঘটনা বর্ণনা করতে যেয়ে সে আরো জানায়, ‘তারা খাঁচার মধ্যে ৫/৬ বন্দীকে ঢুকিয়ে ডুবে যাওয়ার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত পানিতে খাঁচাটি নামিয়ে আনা হত আবার তোলা হত। এভাবে তাদের ওপর নির্যাতন চলত। কেউ তাদেরকে চিনত না, জানতো না তারা কে। ‘
তবে জঙ্গিদের এসব নৃশংস কর্মকান্ড তাকে আইএসের বিরুদ্ধে নিয়ে যায়। সে জানায়, ‘আমি জানতাম যে, ছোট বড় এসব মানুষকে আসলে হত্যা করা হচ্ছে এবং তা অন্যায়। আমি আমার দেশকে হারিয়েছি, সব কিছু। ‘ এসময় সকল শিশুদের প্রতি সে আহবান করে, ‘আমি এই সংগঠনে যোগদান না করার জন্য বিশ্বের সব শিশুকে বলবো, এরা মুসলিম নয়, তারাই ধর্ম অবিশ্বাসী যারা নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে। তারা মুসলিম হতে ভান করে কিন্তু তারা শুধু আত্মঘাতী হামলা করার শিক্ষা দেয় এবং আপনাকে বলে যে আপনি জান্নাতে যাচ্ছেন – কিন্তু কিছুই তা সত্য নয়। ‘
সূত্র: দ্য এন আরব