ভালো কলেজে ভর্তির প্রলোভন দেখিয়ে সদ্য এসএসসি পাস করা এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর মাসহ তার মাথা ন্যাড়া করার মামলায় বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মার্জিয়া আক্তার রুমকি ও তার মা রুমিকে পাবনা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী পূর্বপশ্চিমকে জানান, রোববার রাত প্রায় পৌনে ৮টায় পাবনা শহর থেকে তাদেরকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে। ওই তিনজন ছাড়াও আরও কয়েকজন আসামী রয়েছে। তুফানের স্ত্রী আশাকে গ্রেফতারে কয়েকটি টিম মাঠে নেমেছে। আশা করছি দ্রুত সে গ্রেফতার হবে।
এর আগে, ওই ঘটনায় রোববার বিকালে মামলার প্রধান আসামি শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকারসহ তিনজনকে ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বগুড়ার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম শ্যামসুন্দর রায় রিমান্ডের আদেশ দেন।
রোববার দুপুরে আসামি তুফান সরকার, তার সহযোগী শহরের চকসূত্রাপুর কসাইপট্টির আলী আজম ওরফে ডিপু এবং কালীতলা এলাকার রূপমকে আদালতে হাজির করে ৭ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। এ ছাড়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তি দেওয়ায় আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হয়নি। এদিকে অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে তুফান সরকারকে শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
এর আগে, শুক্রবার বিকেলে কলেজে ভর্তি-ইচ্ছুক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন বগুড়ার শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক তুফান সরকার। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তিনি ও তার সহযোগীরা এবং দলীয় এক নারী কাউন্সিলরকে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পেছনে লেলিয়ে দেন। চার ঘণ্টা ধরে তারা ছাত্রী ও তার মায়ের ওপর নির্যাতন চালান। এরপর দু’জনেরই মাথা ন্যাড়া করে দেন।
এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকার, তার স্ত্রী আশা সরকার, আশা সরকারের বড় বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মার্জিয়া আক্তারসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে দুটি মামলা করেছেন।
এদিকে ধর্ষণের শিকার কিশোরী এবং তার মা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) নূরে আলম সিদ্দিকী চিকিৎসাধীন মা-মেয়েকে দেখতে বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালে যান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনি মেয়েটিকে চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন। এ ছাড়া ফলাফলের ভিত্তিতে তাকে কলেজে ভর্তির ব্যবস্থাও করা হবে বলে জানান ডিসি।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুস সামাদ প্রধানের নেতৃত্বে কমিটিতে আছেন—জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপপরিচালক শহীদুল ইসলাম খান ও জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম।