মোস্তফা কামাল : মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোর ২০১৭ সালের এইচএসসি ফলাফলের ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ায় সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন এলাকায় ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। দিনের পর দিন এ ফলাফলকে কেন্দ্র করে অভিযোগের পাল্লা ভারী হচ্ছে। ৫০ নম্বরের পরীক্ষায় ৬৩ নম্বর, মেধাবী শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল (রচনামূলক) ৫০ নম্বরের মধ্যে ০০(শূন্য) নম্বর, সকল বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েও ফলাফলে অনুপস্থিতি অজুহাতের শেষ নাই।
তথ্য সূত্রে জানা গেছে, কলারোয়া সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের নিয়মিত ছাত্র সুদীপ্ত কুমার সরদার, রোল নং- (৪০৮৬৩৯) ২য় পত্র উচ্চতর গণিত সৃজনশীল রচনামূলক ৫০ নম্বরের মধ্যে ৬৩ নম্বর, নৈর্বত্তিক ২৫ এর মধ্যে ৮, ব্যবহারিক ২৫ এর মধ্যে ২৪ নম্বর পেয়েছে। ৫০ পূর্ণমানে ৬৩ নম্বর পাওয়ায় হাস্যকর, মূখরোচক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ দিকে শ্যামনগর সরকারি মহসিন কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ৪২৩২৪৩ নং রোলধারী ছাত্রের পদার্থ বিজ্ঞান ১ম পত্রের সৃজনশীল রচনামূলক ৫০ নম্বরে মধ্যে ০০ দেওয়া হয়েছে। সকল বিষয়ে পরীক্ষা দিলেও অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে বলে কুষ্টিয়ার একটি কলেজের একজন ছাত্র অভিযোগ করেছেন।
ভাল পরীক্ষা দিয়েও নম্বর কম পাওয়ার অভিযোগের শেষ নেই। যশোর শিক্ষা বোর্ডের এই ধরনের কার্যক্রমে কোমলমতি ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের দুঃচিন্তা বেড়েই চলেছে। ভবিষৎত জীবন গড়তে এ ধরনের হয়রানী ও প্রতিবন্ধকতা শিক্ষার্থীদের অহেতুক মানসিক যন্ত্রণা দেবে।
এ দিকে উত্তরপত্র পুনরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার আবেদনের জন্য ২৪ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত সময় নির্ধারিত ছিল। যার স্মারক নং পনি/উমা/১২০/০২/৯৪৬, তাং ১৯/০৭/২০১৭ ইং।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র ০৪২১-৬৮৬৬৬ নং টেলিফোনে জানান, উত্তর পত্র পুনরায় নিরীক্ষার জন্য ২৫ হাজার ৬৩৬ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করেছে। যার ফলে কয়েক কোটি টাকা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পকেট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।
উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (উচ্চ মাধ্যমিক) সমর কুমার কুন্ডু স্বাক্ষরিত এক নোটিশে জানা যায়, উত্তর পত্র গোচ্ছিত শিক্ষকদের ওয়েব সাইটে প্রদর্শিত ক্রমিকের উত্তরপত্রগুলো ২,৩,৬,৭ আগস্ট ২০১৭ তারিখের মধ্যে নিজ/পত্র বাহকের মাধ্যমে বোর্ডে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। যার স্মারক নং- পনি/উমা/১১৫/২০০৮/০৩/৯৪৯। সে ক্ষেত্রে উত্তরপত্র জমা হয় ২৫ হাজার ৬৩৬ জনের। একাধিক বিষয় হলে উত্তরপত্রের পরিমাণ অধিক হারে বর্ধিত হওয়াটা স্বাভাবিক। উত্তরপত্র জমার শেষ তারিখ ছিল ৭ আগস্ট। ৯ আগস্ট বেলা ১টার দিকে বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্রের ০৪২১-৬৮৬৬৬ টেলিফোনে পুনরায় উত্তরপত্র নিরীক্ষণের আবেদন সংখ্যা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এখন সংখ্যা নিয়ে কি করবেন, পুনরায় রেজাল্ট দেওয়ার সময় হয়েছে। ১/২ দিনের ব্যবধানে উক্ত সংখ্যক উত্তরপত্র মূল্যায়ন কিভাবে সম্ভব হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। যথাযথ উত্তরপত্র মূল্যায়ন না হলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিরবে কাঁদা ছাড়া উপায় থাকবে না।
এদিকে অনেক শিক্ষার্থী অভিভাবক এ ফলাফলের দিকে তাকিয়ে আছে। সাহিদ আলম, কামাল উদ্দীন প্রমূখ অভিভাবকরা জানান, ফলাফল সন্তোষজনক না হলে যশোর শিক্ষা বোর্ডসহ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্ডের মাধ্যমে রিট পিটিশন করবেন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, ৬৩ নম্বর হতে পারে ৩৬ নম্বর। তবে ০০ (শূন্য) সৃজনশীল রচনামূলক অংশে পাওয়াটা স্বাভাবিক, কারণ ০(শূন্য) টাও নম্বর।
পূর্ববর্তী পোস্ট