বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামনিকে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। আজ সকাল সোয়া ৮টায় তাকে দ্বিতীয় তলার অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নিয়ে যাওয়া হয়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন জানিয়েছেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই এ বিষয়ে ব্রিফ করা হবে।
হাসপাতালের ওটির বারান্দায় মুক্তামনির বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনরা অপেক্ষা করছেন। তাদের সঙ্গে সেখানে গণমাধ্যমকর্মীরাও আছেন।
গত মঙ্গলবার মুক্তামনির চিকিৎসার জন্য গঠিত ১৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড তার বায়োপসি রিপোর্ট পর্যালোচনা করে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেয়।
এক সপ্তাহ আগে গত ৫ আগস্ট সকালে মুক্তামনির বায়োপসি করা হয়। ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্লাস্টিক সার্জন ও একই প্রতিষ্ঠানের অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎকরা এই অস্ত্রোপচারে অংশ নেন।
গত মাসে সাতক্ষীরা থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তামনিকে সরকারি উদ্যোগে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুটির খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সরকারের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার খরচ বহনের কথা জানান।
মুক্তামনিকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকরা টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমের তাঁর শরীরের পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রতিবেদন দেখেন এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা এ ধরনের জটিল অস্ত্রোপচারে করতে আগ্রহী নন বলে জানান। তখন ঢামেকের চিকিৎসকরাই সাহস করে মুক্তামনির অস্ত্রোপচারে এগিয়ে আসেন।
মুক্তামনি সাতক্ষীরার সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের মেয়ে। তার এখন ১২ বছর বয়স। ছয় মাস বয়সে তার ডান হাতে একটি গোটা দেখা দেয় এবং ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে সেটি তার হাত থেকে বড় হয়ে যায়। ফলে চলাফেরা করতে সমস্যা দেখা দেয়। গত প্রায় তিন বছর ধরে সে বিছানায় ছিল। গণমাধ্যমে এ খবর আসার পর সবাই মুক্তামনির রোগটির ব্যাপারে জানতে পারে।