বেলজিয়ামের ছোট একটি শহর মালমেডি। প্রায় ১২ হাজার মানুষের বাস এই শহরে। গত মঙ্গলবার এই শহরেরই একটি জায়গায় জমায়েত হয়েছিল প্রায় ১ হাজার মানুষ। কোনো সভা-সমাবেশ নয়, তারা জমায়েত হয়েছিল অমলেট বা ডিম ভাজা খেতে। তা-ও আবার সাড়ে ৬ হাজার ডিমের একটি অমলেট।
ইউরোপের কয়েকটি দেশে সম্প্রতি ডিমে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ফিপ্রোনিলের উপস্থিতি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। ফিনাইলপাইরাজোল গ্রুপের এই রাসায়নিক কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার হয়। বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে ডিমে এই রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়। ফলে দেশগুলোর বিভিন্ন সুপার মার্কেট থেকে লক্ষাধিক ডিম সরিয়ে ফেলতে হয়। নেদারল্যান্ডসে তো দেড় শতাধিক ফার্মই বন্ধ হয়ে যায়।
মালমেডিতে ডিমের অমলেট প্রস্তুতের সময় অপেক্ষারত রেনে নামের এক ব্যক্তি বলেন, দূষিত ডিমের আতঙ্কে পুরো দেশ ছেয়ে গেছে।
মঙ্গলবারের বিশাল অমলেটটি প্রস্তুতের উদ্যোগ নেয় অমলেট ব্রাদারহুড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ২০ বছর ধরে প্রতিবছরই মালমেডি শহরে এই আয়োজন করা হয়ে থাকে। ডিম, বেকন, তেল আর পেঁয়াজ জাতীয় গাছের পাতার মিশ্রণে অমলেট তৈরি করা হয়। এর অন্যতম বিশেষত্ব হলো, কাঠের আগুনে বিশাল কড়াইয়ে মিশ্রণটি ভাজা হয়।
আয়োজকেরা বলেন, ডিম নিয়ে আতঙ্কের পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়োজনের জন্য এক সপ্তাহ আগে থেকে তাঁরা প্রস্তুতি নিয়েছেন। নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ডিম সংগ্রহের সময় অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন করা হয়। অন্য বছর এই উৎসবের জন্য ১০ হাজার ডিম সংগ্রহ করা হলেও এ বছর সাড়ে ৬ হাজার ডিমেই সন্তুষ্ট ছিল আয়োজক প্রতিষ্ঠানটি। এ বছর মানুষের উপস্থিতিও অনেক কম ছিল। গত বছরের আয়োজনেই ডিম ভাজা খেতে জমায়েত হয়েছিল ৭ হাজার মানুষ। কিন্তু এবার একে ছিল ডিম নিয়ে আতঙ্ক। তার সঙ্গে আয়োজনের দিন যোগ হয় বৃষ্টি।
ডিম নিয়ে আতঙ্কের মধ্যেই কেন অমলেট উৎসবে যোগ দিচ্ছেন—এমন এক প্রশ্নের জবাবে রেনে বলেন, স্থানীয় পণ্যের ওপর তাঁদের অগাধ আস্থা। স্থানীয় সরবরাহকারীরাও এ ব্যাপারে পুরোপুরি সচেতন।
আয়োজক প্রতিষ্ঠানের ‘গ্র্যান্ড মাস্টার’ জ্যঁ-খেয়া জিল বলেন, মানুষের মধ্যে দ্বিধা ছিল। তুলনামূলক কম হলেও উপস্থিতির এই সংখ্যা ইতিবাচক।