বহুদিন থেকে মেক্সিকো সীমান্তবর্তী ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে স্বাধীনতার দাবি দানা বাঁধতে শুরু করে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই ৫৫ ইলেক্টোরাল কলেজ বিশিষ্ট এই অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্প হিলারির কাছে পরাজিত হন। ফল প্রকাশের পর ক্যালিফোর্নিয়ার স্বাধীনতার দাবি আরও জোরালো হয়। ওয়াশিংটন পোস্ট ফেব্রুয়ারিতে খবর দেয়, এর পর থেকে তারা নানান ধরনের বৈঠক, আলোচনা ও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে স্বাধীন ক্যালিফোর্নিয়ার আন্দোলনকে জোরদার করে তুলছেন। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক চরম রাজনৈতিক সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি সংগঠন ‘ক্যালেক্সিট’-এর উদ্যোগ নিয়েছে।
নতুন উদ্যোগের নেপথ্যের মানুষেরা নিজেদের ‘ক্যালিফোর্নিয়া কন্সটিটিউশনাল ইনিসিয়েটিভ টিম’ হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার প্রান্তিক সংগঠনটির আনা প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের সাথে ক্যালিফোর্নিয়ার বর্তমান যে সম্পর্ক তাতে ক্যালিফোর্নিয়াসহ অন্য অঙ্গরাজ্যগুলোকে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার অধিকার দেয় না, তাই এর সংশোধনী আনতে হবে।’ গ্রুপটির পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাকালীন সনদের সাংবিধানিক সংশোধনী আনার জন্য সাংবিধানিক সভার আবেদন জানানো হয়েছে। তারা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এ সংবিধান গোল্ডেন স্টেটের নীতি-আদর্শের সাথে মানানসই নয়।
গ্রুপটির সমর্থকরা আশা করছেন, ২০১৮ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের ব্যালটে ক্যালিফোর্নিয়ার স্বাধীনতার বিষয়টি নিয়ে জনগণের মতামত চাওয়া হবে। যদিও চলতি বছর এর আগেও দু’দফা অনুরূপ আবেদন জানানো হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী প্রস্তাবটি ফেডারেল পার্লামেন্টে উঠতে হলে আগে তা অঙ্গরাজ্যের আইন পরিষদে পাস হতে হবে। আইন পরিষদের সমর্থনের অভাবে আগের সেই দু’টি স্বাধীনতার উদ্যোগ বাতিল হয়ে গেছে। নতুন এই প্রস্তাবনাটির শিরোনাম দেয়া দেয়া হয়েছে ‘সাংবিধানিক সংশোধনীর জন্য ক্যালিফোর্নিয়ার আহ্বান।’
ক্যালিফোর্নিয়া কোনও অঙ্গরাজ্য নয়, একটি জাতি। আত্মপরিচয়ের রাজনীতির এই দর্শনে বিশ্বাসী ওই অঙ্গরাজ্যের বহু বহু মানুষ। বহুদিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের হাত থেকে স্বাধীন হতে চায় এই মার্কিন অঙ্গরাজ্যের জনগণের একাংশ। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রে সেই দাবি আরও জোরালো হয়ে ওঠে। তার ক্ষমতা গ্রহণের পর স্বাধীনতার পক্ষে ‘ইয়েস ক্যালিফোর্নিয়া ইন্ডিপেনডেন্স’ নামের একটি গ্রুপ বহুদিন থেকে প্রচারণাও চালিয়ে আসছিল।